করোনা ভাইরাসের প্রভাবে দেশের সব স্কুল-কলেজ বন্ধের দাবির বিষয়টি সরকারের ভাবনায় আছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, ‘বিষয়টি আমাদের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনায়ও আছে। আমাদের ভাবনায়ও আছে। আমরা বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। সময়মতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবো।’
রবিবার (১৫ মার্চ) ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে মুজিববর্ষ উদাযাপনকে ঘিরে সম্পাদকমন্ডলীর বৈঠক শেষ তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস আতঙ্ক, উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের মানুষের ভেতরেও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা রয়েছে। বৈশ্বিক মহামারিতে রূপ নিয়েছে এটি। এ নিয়ে আমাদেরও উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আছে। আমাদের জনগণের মধ্যে দুঃশ্চিন্তা আছে। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৪৯টি দেশ আক্রান্ত হয়েছে। নতুন নতুন দেশ আক্রান্ত হচ্ছে।’
করোনা ভাইরাস মোকাবিলার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘কেবলমাত্র চীনকেই দেখছি নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা কিভাবে কন্ট্রোল করতে পারছে সে বিষয় শেয়ার করার জন্য আমাদের কাছে তাদের একটা চিঠি আসছে। তারা প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত আছে। এ ধরণের সংক্রমণ এবং বিস্তার রোধ করার জন্য সার্বিক সহযোগিতা সহানুভূতির হাত প্রসারিত করে চীন চিঠি দিয়েছে।’
করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় আওয়ামী লীগের প্রস্তুতির বিষয়টি তুলে ধরে সেতুমন্ত্রী বলেন,
‘আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত আমরা প্রস্তুত। প্রথম থেকে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিয়েছেন। সরকার যেমন প্রস্তুত, আমাদের দলকেও প্রস্তুত করা হয়েছে। দেশবাসীকে সর্তক করতে লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। আমরা প্রস্তুত। আমাদের এখানে এখন পর্যন্ত সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা নেই। যারা সংক্রমিত তারা বিদেশ থেকে এসছে। আগে যারা আসছে তাদের কোয়ারেনটাইনে রেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
যেসকল দেশে আক্রান্ত হয়েছে সেসব দেশ থেকে প্রবাসীদের আসা বন্ধের কোনও পরিকল্পনা আছে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে এদের নিরুৎসাহিত করা হচ্ছে। গতকাল থেকে কঠোরভাবে বিষয়টি নিরুৎসাহিত করা হয়েছে এবং যাতে বিদেশ থেকে বিমানের মাধ্যমে আগমন নিয়ন্ত্রণ বা বন্ধ করা যায় সে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
করোনা ভাইরাসের প্রভাবে আওয়ামী লীগের নগর কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় প্রভাব ফেলবে কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘করোনা ভাইরাসের কারণে আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন প্রক্রিয়ায় ঘরোয়া কাজগুলো আরও গতি পাবে। ঘরোয়া কাজ করার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হবে।’
পদ্মাসেতুর কাজ সম্পন্ন কবে হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পদ্মাসেতুর কাজে চাইনিজ কর্মীদের কিছু কিছু ছুটিতে গেছে। কিন্তু তার সংখ্যা খুব বেশি না। আমাদের এখানে ১ হাজারের মতো চাইনিজ কর্মী কাজ করেন। প্রকৌশলী এবং টেকনেশিয়ানসহ তার মধ্যে ছুটিতে গেছে ২৫০ জনের মতো, এদের মধ্যে কিছু চলে এসেছে। বাকিরা এই সময়ের মধ্যে না আসলে যদি তাদের আসা প্রলম্বিত হয় তাহলে কিছু দেরি হলেও হতে পারে। তবে তাদের ছাড়া ৪টি স্প্যান বসানো হয়েছে। আমাদের ৪১টি স্প্যানের মধ্যে ২৬টি স্প্যান বসে গেছে। আগামী দুই মাস পর্যন্ত যদি এই অবস্থা অব্যাহত থাকে তাতেও কোনও অসুবিধার সম্মুখিন হবে না। কাজ যথারীতি এগিয়ে যাবে। জুলাই মাসের মধ্যেই ৪১টি স্প্যান বসে যাবে। এরপর অন্যান্য কাজ চলবে। ২০২১ সালের জুন মাস আমরা টার্গেট দিয়েছি, সেভাবেই কাজ চলছে।’
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, হাছান মাহমুদ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বিএম মোজাম্মেল হোসেন, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, প্রচার সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ-দফতর সম্পাদক সায়েম খান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আতিকুল ইসলামসহ মহানগর আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।