করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে যেখানে শাটডাউনের দররকা হবে সেখানে শাটডাউন করা হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ বুধবার (১৮ মার্চ) সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সমসাময়িক ইস্যুতে ব্রিফিংকালে একথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রুখতে শাটডাউন করা হবে কিনা-সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘শাটডাউন প্রয়োজন হলে করা হবে, যেখানে যেখানে প্রয়োজন। কারণ এখানে সবার আগে মানুষকে বাঁচাতে হবে।’
করোনা সংক্রমণ রোধে আন্তঃজেলা যাত্রীবাহী যান চলাচল বন্ধে প্রয়োজন হলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরবিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, পরিবহন যাত্রী কমে গেছে। মালিকরা হতাশ। পরিস্থিতিই যান চলাচল কমিয়ে ফেলবে। তারপরও প্রয়োজন হলে আমরা ব্যবস্থা নেবো।
তিনি বলেন, ‘আমি আজকে একটা কথা মনে করি- ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগাইনেজশনের যে ডিরেক্টর জেনারেল গতকাল যে ভাষণ দিয়েছেন সেখানে একটি কথাতেই জোর ছিল টেস্ট, টেস্ট অ্যান্ড টেস্ট। তিনবারই তিনি উল্লেখ করেছেন টেস্টের বিষয়টি। মানে সর্ব প্রধান গুরুত্ব পাওয়া উচিত। আমরাও সেটি অনুসরণ করে এগিয়ে যাব।’
করোনাভাইরাসকে অভিন্ন শত্রু উল্লেখ করে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘করোনাভাইরাসের যে আতঙ্ক সে আতঙ্ক সামনের দিনে যাতে আর বাড়তে না পারে সে ব্যাপারে আমরা যথেষ্ট সতর্কতার সঙ্গে এ পরিস্থিতি মোকাবিলা করব এবং দেশবাসী, জনগণকে আহ্বান করব। আমাদের সকলের অভিন্ন শত্রু হচ্ছে এই করোনা। কাজেই যে রাজনৈতিক চিন্তা, সব ধরনের আমাদের গোষ্ঠী চিন্তা-চেতনা, সবকিছুর ঊর্ধ্বে উঠে আমাদের সকলের অভিন্ন শত্রু করোনা মোকাবিলায় আসুন আমরা এগিয়ে যাই।’
বিমানবন্দরে করোনাভাইরাস শনাক্তে অপারগতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশেও এয়ারপোর্টেও স্ক্রিনিংয়ে যথেষ্ট বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে। আমাদের তো অভিজ্ঞতা নেই। এই ভুল থেকে শিক্ষা নিচ্ছি। আমরা আরও শক্তিশালী হয়ে পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত হচ্ছি।’
অনেক বিদেশ ফেরতরা কোয়ারেন্টিনে থাকছেন না, তারা ঘুরে বেড়াচ্ছেন- সাংবাদিকরা এমন দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এ বিষয়ে সরকারিভাবে আমরা কঠোর নজরদারি করব। সাংবাদিক বন্ধুরাও রিপোর্ট করবেন, সঠিক রিপোর্ট। কারণ এখানে প্রাণ বাঁচানোর বিষয়। একটি প্রাণঘাতী বিশ্বের ভয়ংকর একটি ভাইরাসের বিরুদ্ধে আমরা লড়াই করছি। কাজেই এখানে যা যা করা প্রয়োজন আমাদের সকলকেই করা উচিত।’
রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখানে রাজনীতি না করে আমি সকল রাজনৈতিক দলের কাছে অনুরোধ করব, আসুন এই করোনাভাইরাস আমাদের অভিন্ন শত্রু। এই শত্রুর মোকাবিলায় কোনো রকম পলিটিক্স না করে আমরা সত্যিকার অর্থে সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে এই ভয়ংকর শত্রুকে প্রতিরোধ করি।’
করোনা মোকাবিলায় মানসিক শক্তিই বড় শক্তি উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এ বিষয়টা আমাদের নতুন অভিজ্ঞতা। সারা বিশ্বের জন্যই এটি আসলে নতুন অভিজ্ঞতা। মানসিকভাবে আমরা ওয়েল ইকুইপড, এটাই আসলে বড় শক্তি। এ ছাড়া যে ইকুইপমেন্ট দরকার তার ঘাটতি মোকাবিলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়সহ যার যার ঘাটতি আছে পূরণে প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। এ ব্যাপারে আন্তরিকতার কোনো প্রকার ঘাটতি নেই।’
ঢামেকে করোনা সন্দেহে চিকিৎসা অবহেলাজনিত কারণে কানাডা প্রবাসী তরুণীর মৃত্যু বিষয়ে সাংবাদিকরা ওবায়দুল কাদেরের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, ‘আপনারা যেহেতু বলছেন আমরা বিষয়টি দেখব, সতর্ক হব। সতর্কভাবে মোকাবিলায় যা যা প্রস্তুতি নেওয়ার দরকার নেব। আপনারাও আপনার সাংবাদিকতার মাধ্যমে পজিটিভ জনমত গঠন করুন।’