প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য ভাতা প্রদানের দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীল বলেন, করোনাভাইরাসের আতংকে ব্যাপক প্রভাব পড়ে গেছে। ২ জন মারা গেছেন, ২৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। এতে গোটা শহর খালি হয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে গেছে নিম্ন আয়ের মানুষেরা। যারা রিকসা চালায়, যারা সিএনজি চালায়, নির্মান শ্রমিকেরা। আমরা আশঙ্কা করছি যে, ইতোমধ্যে বিদেশ থেকে আসা গার্মেন্টসের চাহিদা বাতিল হয়ে গেছে। এতে করে মালিকেরা ভয়াবহ দুশ্চিন্তার মধ্যে আছেন যে, গার্মেন্টসের শ্রমিকদের বেতন কিভাবে দেবেন। আমরা মনে করি নিম্ন আয়ের মানুষেরা, দিনমজুর, নির্মাণ শ্রমিক এই সমস্ত নিম্ন আয়ের মানুষদেরকে সরকারের তরফ থেকে ভাতা প্রদান করা উচিত। নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আপদকালীন পারিবারিক ভরণভোষণ ও বিশেষ ভাতা-বীমার ব্যবস্থা সরকারকেই করতে হবে। এটা করা অত্যন্ত জরুরী।
গতকাল শনিবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, এটা (করোনাভাইরাস) একটা জাতীয় ও বৈশ্বিক বিপর্যয়। সেজন্য আমরা দলমত নির্বিশেষে, জাতি-ধর্ম নির্বিশেষ সকল মানুষের প্রতি আমরা আবারো আহবান জানাচ্ছি-আসুন আমরা এখানে আতঙ্কগ্রস্থ না হয়ে আমাদের সকলের এই মনোভাব সৃষ্টি করা প্রয়োজন যে, আমরা এটাকে মোকাবিলা করি। এই মোকাবিলা করতে গিয়ে আমাদের যা যা কাজ করা দরকার সেই কাজগুলো আমরা যেন করি। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই- জাতীয় ঐক্যের মধ্য দিয়ে এই বৈশ্বিক বিপর্যয়কে মোকাবিলা করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের লিফলেটে, আমাদের বক্তব্যে যেভাবে বলা হয়েছে জনসমাগম থেকে দূরে থাকা, স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হওয়া, মানুষদের সচেতন করে তোলা বিশেষ করে গ্রামে আছেন যারা তাদেরকে সব দলের পক্ষ থেকে বলছি আমরা-‘আপনারা বাড়িতে থাকুন’।
ব্যবসায়ীদের প্রতি আহবান রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি অনুরোধ জানাবো ব্যবসায়ীদের প্রতি- দয়া করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম বৃদ্ধি করবেন না। মানুষের এই দুর্দিনে তাদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুন। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় প্রাক-প্রস্তুতি না থাকার জন্য ‘সরকারের ইচ্ছাকৃত উদাসীনতা ও ব্যর্থতা’কে দায়ী করেন তিনি। করোনা ভাইরাস সনাক্তকরণ কিট, চিকিৎসকদের বিশেষ পোষাক সরবারহ, তাদের প্রশিক্ষণসহ হাসপাতালে এই রোগের আক্রান্তদের স্বাস্থ্য সেবার বিষয়ে সরকারের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবিও জানান ফখরুল।
তিনি বলেন, আমরা আশঙ্কা করছি এই ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ যদি সরকার না করে আর যদি একমাস এরকম অবস্থা চলে তাহলে মেবি এ সিচুয়েশন লাইক ফেমিন। কারণ সাধারণ মানুষ তো খাবার পাবে না। এরপরে দাম বাড়তে শুরু করেছে। চালের দাম তো বেড়ে গেছে, পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে। এগুলো নিয়ন্ত্রণে সরকার সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। কারণ সরকারের আগে কোনো প্রস্তুতি ছিলো না। চীনের যখন করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়েছে, তারা যখন জরুরীভিত্তিতে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে বার বার বলা হচ্ছ্ এই বিষয়টি তখনও কিন্তু আমাদের সরকার বিষয়টাকে হালকা করে দেখেছে, হালকা করে কথা বলেছে। আজকে যখন এক্সপ্রেস ট্রেন উপরে এসে পড়ে গেছে। এখন এটার বিষয়ে দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা করা যদি না যায় তাহলে প্রচন্ড রকমের বিপর্যয় আসতে পারে বলে আমরা মনে করি।
বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন লন্ডন থেকে স্কাইপে যুক্ত দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। উপস্থিত ছিলেন খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়. নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।