খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত বিশ্বমিডিয়ায় গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, দুই শর্তে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
এ নিয়ে ফ্লোরিডাভিত্তিক ইউনাইটেড প্রেস ইন্টারন্যাশনালের সাংবাদিক ডানিয়েল হেইন্স লিখেছেন, দেশে করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীকে কারাগার থেকে অস্থায়ী ভিত্তিতে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। মঙ্গলবার গুলশানে নিজের বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন আইনমন্ত্রী।
তিনি বলেন, মানবিক কারণে খালেদা জিয়াকে ৬ মাসের জন্য মুক্তি দেয়া হবে। তিনি আরো জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী মানবিক কারণে তাকে মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। এ সময়ে তিনি ঢাকায় তার বাসায় অবস্থান করে চিকিৎসা নিতে পারবেন।
বার্তা সংস্থা এএফপির রিপোর্ট প্রকাশ করেছে সিঙ্গাপুরের অনলাইন স্ট্রেইটস টাইমস ও অনলাইন টিআরটি। এতে বলা হয়েছে, খালেদা জিয়া যাতে চিকিৎসা নিতে পারেন সে জন্য ৬ মাসের শর্তসাপেক্ষে মুক্তি পাচ্ছেন। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, খালেদা জিয়ার এক ভাই ও বোন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তার তীব্র রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী খালেদা জিয়াকে চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাওয়ার অনুমতি দেয়ার আবেদন জানিয়েছিলেন।
১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার পরিবারের রয়েছে প্রাধান্য। এ দু’জনের মধ্যে গড়ে উঠেছে তিক্ত বিরোধ। খালেদা জিয়ার পর ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসেন শেখ হাসিনা। তারপর থেকে তিনিই দেশ শাসন করছেন। মুক্তি দেয়ার সিদ্ধান্ত হলেও ৭৪ বছর বয়সী খালেদা জিয়া অন্য কোনো দেশে যেতে পারবেন না।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এএফপিকে বলেছেন, আবেদনের ভিত্তিতে এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে শাস্তি স্থগিত করা হয়েছে। তিনি এ শর্তে মুক্তি পাচ্ছেন যে, ঢাকার বাসায় অবস্থান করেই তাকে চিকিৎসা নিতে হবে এবং তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না। এএফপি লিখেছে, এ বিষয়ে খালেদা জিয়ার পরিবার বা বিএনপির পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এএফপি আরও লিখেছে, সম্প্রতি খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে একটি মেডিকেল রিপোর্ট ফাঁস হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, তার রিউমেটিক আর্থ্রাইটিস ক্রমশ গুরুতর অবস্থার দিকে যাচ্ছে। এরই মধ্যে তার দুই হাঁটুতে রিপ্লেসমেন্ট অপারেশন করানো হয়েছে। ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়, এখন তিনি যেসব রোগে ভুগছেন এবং তাতে তিনি বিকলাঙ্গ অবস্থায় আছেন। প্রতিদিনের কর্মকাণ্ডে তাকে প্রায় সব কিছুতে অন্যের ওপর নির্ভর করতে হয়।
লন্ডনের ডেইলি মেইল প্রকাশ করেছে বার্তা সংস্থা এপির রিপোর্ট। এতেও প্রায় একই কথা বলা হয়েছে। একই রকম রিপোর্ট করেছে ভারতের অনলাইন এএনআই।