করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বাত্মক লকডাউনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, ‘করোনা ভাইরাসের চেয়ে খাদ্য সংকট যেন বড় না হয়ে ওঠে, সেদিকে সরকারকে খেয়াল রাখতে হবে।’
দেশের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আজ রবিবার (২৯ মার্চ) কালের কণ্ঠ’র সঙ্গে আলাপকালে এ আহ্বান জানান সেলিম।
সিপিবি সভাপতি বলেন, করোনা পরিস্থিতির চরম অবনতি হতে পারে সহসা। একথা বিবেচনায় রেখে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। সারা দেশে ‘ঘরে থাকার নির্দেশনার’ মেয়াদ বাড়ানো, এমনকি ‘সর্বাত্মক লকডাউনে’ যেতে হতে পারে। সেটি হলে ‘দিন আনি দিন খাওয়া’ পরিবারগুলোর খাদ্য সংকট আগামীতে আরো বাড়বে। সেই সংকট যেন বড় বিপদ না হয়ে ওঠে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
সংকট মোকাবেলায় সুপারিশ তুলে ধরে দেশের অন্যতম এই বাম নেতা বলেন, জরুরি ভিত্তিতে খেটে খাওয়া মানুষকে খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরকারকে সেনা-সহায়তায় তৃণমূলে ক্ষুধার্ত পরিবারের তালিকা প্রস্তুত করে, তাদেরকে রেশনকার্ডের মতো কার্ড দিয়ে প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য বাজেটের ৫ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করতে হবে। তিনি বলেন, শক্তিশালী গণবন্টন ব্যবস্থা আগে থেকে থাকলে এ কাজ এরইমধ্যে শুরু করা যেতো, সে কথা মনে রেখে ভবিষ্যতে তা স্থায়ীভাবে চালু রাখতে হবে।
সারা দেশের দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে সিপিবি সভাপতি বলেন, ‘পার্টির উদ্যোগে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে চাল-ডাল ইত্যাদি সংগ্রহ করে তা প্যাকেট করে ক্ষুধার্ত পরিবারগুলোতে পৌঁছে দিতে হবে। গণসংগঠনের পাশাপাশি রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন এবং ব্যক্তিদেরও এই কাজে নামাতে হবে। সবার প্রচেষ্টাকে যথাসম্ভব সমন্বয় করতে হবে। এসব কাজে যুক্ত কর্মীদের করোনা সংক্রমণ থেকে সুরক্ষার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। কাজের প্রয়োজনে কর্মীদের চলাফেরার অনুমতি নিয়ে রাখতে হবে। এসব কাজের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হবে।
দেশবাসীর এই মহাবিপদে বিপ্লবী মানবিকতা নিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সেলিম বলেন, একাত্তরে ‘জীবন বাজি রেখে পাকিস্তানি ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে বিজয়ী হয়েছি। এবার করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধেও বিজয়ী হতে হবে।’