‘করোনা’ দুর্যোগ মোকাবিলায় গণমাধ্যম ও সরকার আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে, জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার দুপুরে ঢাকায় তথ্যমন্ত্রী মিন্টু রোডের সরকারি বাসভবনে গণমাধ্যম নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠকের পর একথা জানান।
নিউজপেপারস ওনার্স এসোসিয়েশন অভ বাংলাদেশ- নোয়াব-এর সভাপতি এ কে আজাদ, নির্বাহী সদস্য মতিউর রহমান ও তারিক সুজাত, সম্পাদকীয় পরিষদের সভাপতি মাহফুজ আনাম, সাধারণ সম্পাদক নঈম নিজাম, এসোসিয়েশন অভ টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স-এটকো এর সিনিয়র সহসভাপতি ও এডিটরস গিল্ডের সভাপতি মোজাম্মেল হক বাবু, এটকো’র অন্যতম পরিচালক ইকবাল সোবহান চৌধুরী বৈঠকে যোগ দেন। তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাহানারা পারভীন এসময় উপস্থিত ছিলেন।
করোনা সংকট মোকাবিলা ও এই সংকটের কারণে গণমাধ্যমে নতুনভাবে সৃষ্ট সমস্যা সমাধানে ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগে ঐক্যমত্যের কথা জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বৈশ্বিক দুর্যোগের এসময় আমাদের দেশও করোনা ভাইরাস থেকে মুক্ত থাকেনি। এই প্রেক্ষাপটে সংবাদপত্র ও টেলিভিশন মালিক, সম্পাদকীয় পরিষদ ও এডিটরস গিল্ড নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনা হয়েছে। এ দুর্যোগ মোকাবিলায় মানুষকে অবহিত ও সতর্ক করা, সঠিক চিত্র তুলে ধরা ও সার্বিকভাবে গণমাধ্যমের ভূমিকা ব্যাপক।’
সরকার ও গণমাধ্যমসহ আমরা সকলে যাতে একসাথে কাজ করে এই সংকট থেকে উত্তরণ করতে পারি, সেবিষয়ে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী জানান, আমরা ঐক্যমতে পৌঁছেছি যে, বৈশ্বিক দুর্যোগের এসময় অবশ্যই আমরা সবাই একযোগে কাজ করবো।
জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানের কথা ব্যাখ্যা করে মন্ত্রী ড. হাছান বলেন, ‘অতীতেও আমরা দেখেছি, এমন দুর্যোগের সময়ে নানা ধরণের গুজব রটানো হয়, কিছু অনলাইন পোর্টাল থেকে মানুষকে আতংকিত করার জন্য ভুয়া সংবাদ পরিবেশিত হয়। এই গুজব ও মিথ্যা সংবাদের বিরুদ্ধে আমাদের মূলধারার গণমাধ্যমগুলো ভূমিকা রাখতে পারে এবং রাখছে। সরকারও তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।’
‘সেইসাথে এধরণের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে কিভাবে আরো জোরালো ভূমিকা রাখা যায়, সেবিষয়ে আমরা মূলধারার গণমাধ্যমের সহযোগিতা চেয়েছি’ জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই একমত হয়েছি যে, এসময় জনগণকে আতঙ্কিত করা কোনোভাবেই সমীচীন নয়, বরং সতর্ক করা দরকার এবং সরকার ও সবাই আর কী কী করতে পারি, ভবিষ্যত পরিকল্পনায় আরো কী যুক্ত করতে পারি, সেবিষয়ে আমরা আরো ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবো।’
করোনা পরিস্থিতিতে গণমাধ্যমে সৃষ্ট সমস্যাকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় এনে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই সংকটময় সময়ে সংবাদপত্র ও টেলিভিশনও নানা সংকটের মুখোমুখি হয়েছে, বিশেষ করে সংবাদপত্রের সার্কুলেশন কমে গেছে, কোনোটা অর্ধেকে নেমে এসেছে, কোনোটা আরো কমে গেছে। হকারেরা ও সংবাদপত্রে যারা দৈনিকভিত্তিতে কাজ করে, তারা নানা সমস্যায় পড়েছে। টেলিভিশনেও কিছু সমস্যা রয়েছে। এসমস্যাগুলো মোকাবিলায় সরকারের পক্ষ থেকে কী কী করা যায়, তাদের পাওনা বিলগুলো যাতে আমরা তাড়াতাড়ি দিতে পারি, সেগুলো নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি।’
বৈঠকশেষে বিটিভিকে দেয়া সাক্ষাৎকারে সম্পাদকীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নঈম নিজাম এসময় সংকট উত্তরণে সরকারের সাথে একযোগে কাজের বিষয়ে ঐক্যমত্যের কথা জানিয়ে বলেন, বিশ্বব্যাপী সংকটের সময়ও গণমাধ্যম ইতিবাচক ভূমিকা অব্যাহত রাখে এবং রাখবে। সংবাদপত্র শিল্পের স্বার্থে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে পত্রিকাগুলোর পাওনা বিলগুলো দ্রুত পরিশোধের অনুরোধ জানান তিনি।
এটকো সহসভাপতি মোজাম্মেল হক বাবু সাংবাদিকরা এসময় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে উল্লেখ করেন ও আগামী পাঁচমাসের জন্য এটকোকে একটি থোক বরাদ্দের অনুরোধ জানান। তিনিও সরকারের কাছে টিভিগুলোর পাওনা বিজ্ঞাপন বিল দ্রুত পরিশোধের অনুরোধ জানান। গুজব প্রতিরোধে মূলধারার গণমাধ্যম দৃঢ় ভূমিকা রাখবে, বলেন বাবু।