বেসরকারি হাসপাতালগুলোকেও এই দুর্যোগে জনগণের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে অনলাইনে দেয়া বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
এসময় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ফেডারেশন অভ্ টিভি প্রফেশনালস অর্গানাইজেশন-এফটিপিও, বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদ- বিএসপি, প্রাইভেট রেডিও ওনার্স এসোসিয়েশন অভ্ বাংলাদেশ-প্রোব নেতৃবৃন্দের হাতে করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী হিসেবে হ্যান্ড-স্যানিটাইজার, মাস্ক, গ্লাভস ও সাবান এবং একটি বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিকে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য ব্যক্তিগত সুরক্ষা পোষাক-পিপিই হস্তান্তর করেন।
আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী ও উপ-দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান এসময় উপস্থিত ছিলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, এসময় অনেক রোগীকে চিকিৎসা পেতে অসহায়ের মতো এক হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরতে হচ্ছে, এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। কারণ, সর্দিকাশি হলেই তা করোনা নয়, আর করোনা রোগী হলেও তার সাহায্যার্থে আমাদের এগিয়ে আসা উচিত। অনেক ডাক্তার-নার্সই আজ করোনা রোগীদের সেবা দিচ্ছেন এবং অনেক করোনা আক্রান্ত রোগীও সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে গেছে। তাই আমি আশা করবো, যারা প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিক পরিচালনা করেন, তারা জনগণের পাশে দাঁড়াবেন। জনগণ যাতে বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা পায়, সেটি তারা নিশ্চিত করবেন, জনগণ এটিই প্রত্যাশা করে।’
‘কোন হাসপাতাল দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে, চিকিৎসার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও রোগী ফেরত দিচ্ছে, সরকার সেটিও নজরে রাখছে, সময়মতো ব্যবস্থা নেয়া হবে’, বলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
এসময় সবাইকে প্রধানমন্ত্রীর ৩১ দফা নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানান তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার নানা পদক্ষেপ নিয়েছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ৩১ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন। আমরা যদি সবাই ৩১ দফা নির্দেশনা মেনে চলি তবে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা করোনার বিস্তাররোধে সক্ষম হবো। আমি গণমাধ্যমের মাধ্যমে সবার কাছে এই ৩১ দফা নির্দেশনা পৌঁছে দেয়া ও সবাইকে মেনে চলার আহ্বান জানাই।’
প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এই দুর্যোগে দলের নেতাকর্মী ও বিত্তবানদের জনমানুষের পাশে দাঁড়ানোর যে নির্দেশ দিয়েছিলেন, সে অনুযায়ী আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, বলেন ড. হাছান মাহমুদ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা করোনা পরিস্থিতির সকল দিক ওয়াকিবহাল এবং সব খুঁটিনাটি বিষয়ে লক্ষ্য রাখছেন এবং সেই মোতাবেক যেখানে যে পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন, সে ব্যবস্থা নিচ্ছেন জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সামনে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যে আশংকা রয়েছে, তা মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে তিনি প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সভাপতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে দলের পক্ষ থেকে ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দীর তত্বাবধানে করোনা প্রতিরোধ সামগ্রী দেশের সকল জেলায় পাঠানো হয়েছে। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে যেটি করা হচ্ছে, অন্য কোনো দলের পক্ষ থেকে সেটি করা হচ্ছে বলে আমার জানা নেই। অনেকে অনেক কথা বলেন, কিন্তু বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কথা নয়, কাজে বিশ্বাসী। সেকারণে শুধু করোনা প্রতিরোধ সামগ্রীই নয়, দেশের খেটে খাওয়া মানুষ, যারা দিন এনে দিন খায়, তাদের জন্য সরকারের পাশাপাশি দলের পক্ষ থেকেও গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে। আমাদের জনপ্রতিনিধিরা, এমপি, উপজেলা ও ইউনিয়ন চেয়ারম্যানেরা সেই ত্রাণ পৌঁছে দিচ্ছেন, অনেকে নিজ উদ্যোগেও ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করছেন।’
এসময় উপস্থিত একজন সাংবাদিক করোনা পরিস্থিতিতে বিএনপি’র দেয়া ৮৭ হাজার কোটি টাকার তেহবিল গঠনের প্রস্তাবের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, বিএনপি কোনো হোমওয়ার্ক না করে শুধু বলার জন্য এমন প্রস্তাব দিয়েছে। কার্যত কিছু লিফলেট বিলি করা ছাড়া জনগণের পাশে দাঁড়াতে তাদের দেখা যায়নি।
পরে তথ্যমন্ত্রী এফটিপিও, বিএসপি এবং প্রোব নেতৃবৃন্দের সাথে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার নানাদিক নিয়ে আলোচনা করেন। এফটিপিও সভাপতি নাট্যকার মামুনুর রশীদ, সদস্য এস এ হক অলীক, বিএসপি সভাপতি মো: শাহজালাল, সাধারণ সম্পাদক এম জি কিবরিয়া, প্রোব সভাপতি মো: হারুন-উর-রশীদ, সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হাসান চৌধুরী রনি ও বাংলাদেশ সংবাদপত্র কর্মচারি ফেডারেশন সভাপতি মো: মতিউর রহমান তালুকদার আলোচনায় অংশ নেন।