বিএনপিকে বিদেশি লবিস্টদের পেছনে ডলার খরচ না করে জনগণের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার রাজধানীর মিন্টো রোডে তথ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন থেকে দেয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ আহ্বান জানান।
হাছান মাহমুদ বলেন, দেশের এক-তৃতীয়াংশের বেশি মানুষকে যেখানে সরকার সহায়তা দিচ্ছে, সেখানে বিদেশি লবিস্টদের পেছনে লক্ষ লক্ষ ডলার খরচ না করে আর ঘরে বসে দোষ না খুঁজে জনগণের পাশে দাঁড়ান।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে ১০টি সিটি করপোরেশন আছে সেই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে এই সহায়তার বাইরে ও আরও অন্যান্য সহায়তা করা হচ্ছে। বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের যে অ্যালার্ম ফান্ড আছে সেই ফান্ড থেকে অনেককে সহায়তা করা হচ্ছে, বিশেষ করে মধ্যবিত্তের কাছে এই সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের দলের সমস্ত পর্যায়ের নেতাকর্মীদের প্রথম থেকেই দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য এবং এই করোনা থেকে মুক্ত থাকার জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এই কার্যক্রম পরিচালনা করতে বলা হয়েছে। আমাদের দলের একেবারে গ্রাম পর্যন্ত বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে।
হাছান বলেন, এইভাবে সরকার এবং আওয়ামী লীগ ও প্রশাসন জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারপরও অনেক জায়গায় প্রশাসন স্ব উদ্যোগে অনেক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এভাবে দেশের এক-তৃতীয়াংশ মানুষ, কোনো কোনো পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে সেটা ৪০ শতাংশ দেখা যাচ্ছে। যে ব্যক্তিটি সাহায্য পাচ্ছে তার পরিবারকেও যদি হিসাব করা হয় তাহলে দেখা যাচ্ছে প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষের কাছে এই সহায়তা পৌঁছে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, এভাবে যখন সরকার মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে সহায়তা করছে তখন আমরা দেখতে পাচ্ছি একটি মহল তারা নিজেরা কিছু না করে তারা নানা ধরনের দোষ-ত্রুটি খোঁজার এবং সরকারের সমালোচনা করার যে চিরাচরিত অভ্যাস সেই অভ্যাস থেকে এই মহাদুর্যোগের সময় তারা বেরিয়ে আসতে পারেনি।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, যদিও আমাদের পক্ষ থেকে আমরা সবসময় বলে এসেছি আসুন, আমরা একসঙ্গে কাজ করি। কিন্তু সেটিতে তারা সাড়া না দিয়ে বরং সরকারের সবসময় দোষ-ত্রুটি খোঁজার সে অভ্যাস থেকে তারা বেরিয়ে আসতে পারেনি।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন গত কয়েকদিন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রিজভী আহমেদসহ বিএনপির নেতৃবৃন্দ নানা ধরনের বক্তব্য রেখেছেন। তারা জনগণের পাশে কোথায়? আমরা দেখতে পাচ্ছি দু-একটি ছবি তুলে তারা আর জনগণের পাশে নেই। সমগ্র দেশে তাদের নেতাকর্মীদের জনগণের পাশে দেখা যাচ্ছে না। অথচ আমাদের দলের একেবারে গ্রাম পর্যায়ের নেতাকর্মীরা জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে।
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, সরকারি ত্রাণ নিয়ে অনিয়মের কথা বিভিন্ন জায়গায় ধরা পড়েছে, এগুলো সরকারই উদঘাটন করেছে এগুলো সরকারের পুলিশ উদঘাটন করেছে এগুলো কোনো বেসরকারি সংস্থা উদঘাটন করেনি, বেসরকারি পুলিশ উদঘাটন করেনি এগুলো সরকারের পুলিশ তাদের ধরেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আপনারা জানেন বাংলাদেশে ইউনিয়ন পরিষদ উপজেলা পরিষদ এবং সিটি করপোরেশন ছাড়াও জেলা পরিষদ; এভাবে যদি আমরা হিসাব করি বাংলাদেশে ৭২ হাজারের বেশি স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি আছে। সেই ক্ষেত্রে ৪৪টি মামলা হয়েছে। সেটি শতকরা হিসাবে দুই হাজারের মধ্যে একটি ঘটনা। একটি ঘটনা ও কাম্য নয়।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী এ জন্য গতকাল ঘোষণা করেছেন যারা এ ধরনের অনিয়মের সাথে যুক্ত থাকবেন তাদের মোবাইল কোর্টে বিচার করে এরপর রেগুলার মামলার মাধ্যমে আরও বিচার হবে। সুতরাং সরকারে ক্ষেত্রে জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমি স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলেছি। সবগুলো ঘটনায়ই কিন্তু এখনো পর্যন্ত প্রমাণিত হয়নি। স্থানীয় সরকার সূত্রমতে এ পর্যন্ত ছয়টি ঘটনা প্রমাণিত এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে একজন চেয়ারম্যান-দুজন মেম্বারকে বরখাস্ত করেছে। সরকার এই ব্যাপারে এই ধরনের ঘটনাকে কঠোর হস্তে দমন করার জন্য বদ্ধপরিকর। অথচ এই ধরনের কিছু ঘটনা নিয়ে যেইভাবে বক্তব্য রাখা হচ্ছে, যেভাবে এই নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে কথা বলা হচ্ছে বিএনপিকে অনুরোধ জানাব নিজেদের চেহারাটা আয়নায় দেখার জন্য।
হাছান মাহমুদ বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মামলার বিচার বন্ধ করার জন্য, তারেক রহমানের মামলার বিচার বন্ধ করার জন্য তাদের মামলার ব্যাপারে লক্ষ লক্ষ ডলার খরচ করে তারা বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করেছে। অথচ জনগণের পাশে তারা নাই। তাদের অনুরোধ জানাব, বিদেশে লবিস্ট নিয়োগে লক্ষ লক্ষ ডলার খরচ না করে সেই টাকা বরং জনগণের জন্য খরচ করুন।