দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের পর ধীরে ধীরে সেই সংখ্যা বাড়তে থাকে। প্রথম দিকে দুজন বা তিনজন করে করোনা রোগী শনাক্তের ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু এই সংখ্যা চলতি মাস থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে। বিশেষ করে গত ১০ দিনের ব্যবধানে করোনা রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ২০ গুণের বেশি।
দেশে করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত প্রথম রোগী ধরা পড়ে গত ৮ মার্চ। ওই দিন তিনজন করোনা রোগী শনাক্তের ঘোষণা দেয় সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা।
ওই রোগীদের সম্পর্কে ৮ মার্চের ব্রিফিংয়ে মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা জানান, আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে দুজন ইতালি থেকে সম্প্রতি দেশে ফিরেছেন। তাদের কাছে থেকে একজন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি আরও জানান, আক্রান্ত তিনজনের মধ্যে দুজন পুরুষ ও একজন নারী।
গত ৪ এপ্রিল থেকে আজ সোমবার পর্যন্ত আইইডিসিআরের শনাক্ত করা করোনা রোগীদের সংখ্যা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গত ৪ এপ্রিল শনাক্ত হয় মাত্র ৯ জন করোনা রোগী। এরপর যেন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে রোগীর সংখ্যা। ৫ এপ্রিল ১৮, ৬ এপ্রিল ৩৫, ৭ এপ্রিল ৪১, ৮ এপ্রিল ৫৪ জন। এরপরের দিন এক লাফে করোনা রোগী বেড়ে দাঁড়ায় ১১২ জনে। তারপর ১০ এপ্রিল রোগী কমে হয় ৯৪ জন এবং পরের দিন অর্থাৎ ১১ এপ্রিল রোগী আরও কমে হয় ৫৮ জন।
টানা দুদিন করোনা রোগী কমায় কিছুটা আশার কথা শোনান স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদ। তিনি জানান, সরকার করোনা রোগী নিয়ন্ত্রণে কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে।
কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের ওই বক্তব্যের পরের দিন ১২ এপ্রিল করোনা রোগী এ লাফে বেড়ে দাঁড়ায় ১৩৯ জনে। এরপর আজ রোগী আরও বেড়ে যায়। আজকের ব্রিফিংয়ে ঘোষণা দেওয়া হয়, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১৮২ জন। এক দিনে এটাই সর্বোচ্চ শনাক্ত।এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৮০৩। আর মৃত্যু বেড়ে হয়েছে ৩৯।
দেশে করোনাভাইরাসের কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়েছে বলে আজ ব্রিফিংয়ে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন ইতিমধ্যেই কমিউনিটি ট্রান্সমিশন শুরু হয়ে গেছে। সেটি যেন না বাড়ে সেদিকে আমাদেরকে খেয়াল করতে হবে। আমরা আমাদের হাসপাতাল ও অন্যান্য ব্যবস্থাপনা মজবুত করছি। কিন্তু, আমাদেরকে বুঝতে হবে হাসপাতালে লাখ লাখ লোকের চিকিৎসা কোনো দেশই দিতে পারে না। আমাদেরকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আমাদের কোভিড মোকাবিলার যে মূল অস্ত্র সেটা হলে ঘরে থাকা এবং পরীক্ষা করা। যার মাধ্যমে যারা সংক্রমিত হয়েছেন তারা চিহ্নিত হবেন এবং তাদেরকে আইসোলেশনে রাখা যাবে যাতে তারা আর কাউকে সংক্রমিত না করতে পারে।’