ক্ষমতাসীনদের আত্মসাত ও লুটের কারণেই সারাদেশে ত্রাণ নিয়ে হাহাকার চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ। মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর রাজারবাগে ইস্টার্ন পয়েন্টের কাছে ‘ফিউচার অব বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠনের ঘরে ঘরে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছে দেয়ার কর্মসূচি উদ্বোধন করতে গিয়ে তিনি এই অভিযোগ করেন।
ফয়সাল সালামের নেতৃত্বাধীন এই সংগঠনটি সারাদেশে বিভাগীয় পর্যায়ে দুস্থদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ত্রাণ পৌঁছে দেয়ার কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। উদ্বোধনের সময় সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কয়েকজনের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন রিজভী আহমেদ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফিউচার অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক শওকত আজিজ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাজেদ বিন হাসান, কে জি সেলিম, সদস্য নাহিদ রহমান পুতুল, রবিকুল হাবিব প্রমুখ।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজকে সরকারি যে ত্রাণ, এই ত্রাণ আত্মসাত হয়ে যাচ্ছে। কাদের দ্বারা? এই সরকারি দলের লোকদের দ্বারা। হাহাকার করছে খুলনার রেল স্টেশনের শ্রমিকরা, একটু ত্রাণের জন্য। কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের নার্সরা খাবার পাচ্ছেন না। অথচ ক্ষমতাসীন দলের লোকজনদের বাড়িতে চাল বোঝাই হয়ে যাচ্ছে। কার চাল? জনগণের চাল। তাদের টাকায় কেনা চাল।
সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরে তিনি বলেন, যখন সব মহল থেকে বলা হচ্ছে যে, সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে এই মহামারি মোকাবিলা করতে হবে। তখন আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, সরকার একগুয়েমি করছে। একতরফাভাবে কাজ করতে গিয়ে শুধু নিজের দলের লোকজনদের পেট ভরানোর কাজটা গত ১০ বছর ধরে যেভাবে করেছেন, এখনও সেটাই করছে। যখন মানুষ রাস্তায় মরে পড়ে থাকছে, মানুষ একটু খাবারের জন্য হাহাকার করছে। রেল স্টেশনে, পথে-ঘাটে একটু ত্রাণের আশায় মানুষ দিনের পর দিন গ্রীষ্মের এই প্রখর রোদ্রের মধ্যে অপেক্ষা করছে, তারা ত্রাণ পাচ্ছেন না। সেখানে ত্রাণ লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। আমরা এখনো বলছি যে, জনগণের এই দুর্দশা লাঘব করার জন্য সবাইকে একসঙ্গে এগিয়ে এসে কাজ করতে হবে।
রিজভী বলেন, আজকে যারা সরকারে আছেন তাদের প্রধান দায়িত্ব এই কাজটা করার। অথচ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেতুমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী তারা বলছেন যে, না ত্রাণ চুরি হচ্ছে না, চাল চুরি হচ্ছে না, আমরা ঠিক মতোই দিচ্ছি।
রিজভী বলেন, প্রতিদিনই আপনারা গণমাধ্যম খুললেই দেখবেন শুধুমাত্র চাল চুরির ঘটনা, ত্রাণ আত্মসাতের ঘটনা। আর ওদিকে মানুষ রাস্তার ওপর দাঁড়িয়ে আছে একটু ত্রাণের আশায়, দুস্থরা হাহাকার করছে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণে সরকারের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি এখনো নেই উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আমরা দেখছি, ডাক্তারদের ছাটাই করা হচ্ছে। অথচ ডাক্তার-নার্সদের নিরাপত্তা বিধান করছেন না। আপনি আপনার একনায়কতন্ত্রের যে আচরণ, সেই আচরণটা অব্যাহত রেখেছেন। এভাবে মহামারির তাণ্ডব মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এখনো সময় আছে, সরকার সমন্বিত উদ্যোগ নেবেন। ঐক্যবদ্ধভাবে যাতে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করা যায় সেজন্য সবাইকে দুস্থ মানুষের বাড়িতে গিয়ে ত্রাণ পৌঁছে দিতে হবে। ফিউচার অব বাংলাদেশের এই উদ্যোগের জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন রুহুল কবির রিজভী।