কোনও উপসর্গই ছিল না তার। কিন্তু মৃত্যুর পর নমুনা সংগ্রহ করে ফলাফল আসে করোনাপজিটিভ। করোনাভাইরাস নিয়ে এ রকম একটি ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা শহরে। আর নিয়ে এখন পুরো জেলায় আতঙ্ক।
জানা গেছে, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখার কর্মকর্তা মো. মজনুর হোসেন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। তবে তার করোনা রোগের কোনও উপসর্গ ছিল না, কিন্তু মৃত্যুর পর পরীক্ষা করানো হলে তাতে তার রিপোর্ট পজিটিভ আসে।
শনিবার তার ছেলে মাজহারুল ইসলাম নিশ্চিত করেছেন তার বাবার করোনা পজিটিভ ছিল। এর আগে ১৬ এপ্রিল তিনি মারা যান।
এদিকে, ইতোমধ্যেই জেলায় ২৪ জন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ।
মরহুম মনজুর হোসেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন শাখার বেতার যন্ত্রচালক ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন।
মাজহারুল ইসলাম জানান, তার মৃত্যুর পর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। আমাদেরকে ১৭ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১টায় ফোন করে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়েছে, আমার বাবার করোনা পজিটিভ ছিল। আজকে আমরা সেখানে যাওয়ার পর আমাদেরকে সকল কাগজপত্র (মৃত্যু সনদ) বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং লাশ ঢাকায় দাফন করা হয়েছে।
তিনি জানান, তার বাবার করোনার কোনও উপসর্গই ছিল না। তিনি সুস্থ ছিলেন। ১৫ এপ্রিল রাতে তিনি গ্যাসটিকের ব্যথা অনুভব করলে ওষুধ খান। এতে তার পেট খারাপ হলে ১৬ এপ্রিল সকাল ৬টায় আমরা তাকে নিয়ে হাসপাতালে যাই। সকাল ৯ টায় তিনি মারা যান।
শনিবার বিকালে তার মৃত্যুতে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ শামীম বেপারী স্বাক্ষরিত শোক বার্তায় জানানো হয়, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় প্রো-একটিভ মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল লিমিটেডে থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় পথেই ইন্তেকাল করেন তিনি। মরহুমের আকস্মিক মৃত্যুতে জেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারী গভীরভাবে শোকাহত। আমরা মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোকাহত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।
এদিকে, নারায়ণগঞ্জে প্রথম এমন উপসর্গহীন করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর সংবাদে ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে জেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন দফতরে।