করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিট ‘জিআর কোভিড-১৯ ডট ব্লট’ হস্তান্তর করেছে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে এ কিট হস্তান্তর করা হয়। তবে কিটগুলো হস্তান্তরের জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রী, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তাদের কেউ আসেননি।
কিট হস্তান্তর বিষয়ে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘আমাদেরকে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) কনফার্ম করেছিল আসবে, একমাত্র তারাই এসেছে। সিডিসিকেই আমরা দিয়ে দেব। বাকিদেরকে আমরা কালকে সরকারিভাবে প্রত্যেকের অফিসে পৌঁছে দেব। আমাদের দুঃখ, আপনাদের সামনে হস্তান্তর করতে পারছি না।’
তিনি বলেন, ‘ওষুধ প্রশাসনের মহাপরিচালক (ডিজি) আমাকে জানিয়েছেন, আজকে তারা আসতে পারবেন না। জানি না, আজকে তারা কেন আসতে পারলেন না। মন্ত্রীকেও (স্বাস্থ্যমন্ত্রী) আমরা তিন দিন আগে এই অনুষ্ঠানে আসার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলাম। উত্তর পাইনি। মন্ত্রী এখন অত্যন্ত ব্যস্ত মানুষ। হতেই পারে। কারণে-অকারণে অনেক ব্যস্ত আছেন, লেনদেনের ব্যাপারও হয়তো আছে।’
ডা. জাফরুল্লাহ বলেন, ‘আমরা আর্মি প্যাথলজি ল্যাবরেটোরিকেও আমন্ত্রণ করেছিলাম। তারা অনুমতি পাননি বলে আসতে পারবেন না। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএমএসইউ) চেয়ারম্যান ফোন করে আমাকে জানিয়েছেন, তিনি অসুস্থ, তাই আসতে পারলেন না।’
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের এই উদ্ভাবনে অনেকেই সাহায্য করেছেন। অনেকেই স্বাস্থ্যের সঙ্গে জড়িত না, স্বাস্থ্যখাতে পৃথিবীর অধিকাংশ পরিবর্তন এনেছেন বে-ডাক্তাররা। ডাক্তাররা যতখানি পরিবর্তন করেছেন তার চেয়ে বেশি পরিবর্তন করেছে অন্য পেশার ব্যক্তিরা। সেই ইতিহাস আজকে বলার সময় নেই। তবে আমাদেরকে যারা বেশি সহযোগিতা করেছেন আমি তাদের দু-চারজনের নাম উল্লেখ করতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘প্রথমে উল্লেখ করতে চাই আমাদের ফরেন মিনিস্টার আব্দুল মোমেন সাহেবের নাম। যখন আমাদের জিনিসগুলো আটকা পড়ে থাকল পৃথিবীর বিভিন্ন রাজধানী, পৃথিবীর এই করোনার কারণে বিভিন্ন পথ-ঘাট বন্ধ হয়ে গেল তখন আমি উনাকে একটা ফোন করি। উনার সঙ্গে আমার খুব সুসম্পর্ক না, অনেক জায়গায় উনার ক্রিটিসিজম করেছি আমি। উনি বললেন কোথায়, চীনের গুয়াংজু বিমানবন্দরে, যদি উঠিয়ে দেওয়া যায়। ওখানে আমাদের যে অ্যাম্বাসেডর, বেইজিংস্থ অ্যাম্বাসেডর মাহবুব জামান সাহেব আমাকে ফোন করেছেন। তিনি ও তার সহকর্মীরা বেইজিং থেকে গুয়াংজু অনেক দূর। তারা এটি প্লেনে উঠিয়ে দিয়ে ঢাকায় পাঠিয়ে সহযোগিতা করছেন।’
এ সময় চীনের গুয়াংজু ও ভারতের ব্যাঙ্গালুরু থেকে কাঁচামাল এনে দেওয়ায় বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস বাংলার প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী।
এদিকে, ওষুধ প্রশাসন বলছে, গণস্বাস্থ্যকে এমন অনুষ্ঠান করতে মানা করেছিল তারা। কিট উদ্ভাবনের স্পেসিফিকেশন উল্লেখ করে নিবন্ধন আবেদন করতে বলেছিল ওষুধ প্রশাসন। এ বিষয়ে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমরা কেন যাব? এটা তো এপ্রুভড কোনো প্রডাক্ট না। তারা আবেদন করবে। তারপর নিবন্ধনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে।’