করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিরা সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখায় দেশের কোথাও ‘খাদ্যের অভাব হয়নি’ বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাসীন দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ।
মঙ্গলবার (২ জুন) রাতে ‘বিয়ন্ড দ্য প্যানডেমিক’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানের চতুর্থ পর্বে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ‘করোনা সংকটে জনপ্রতিনিধিদের করণীয়’ শীর্ষক ডিজিটাল এ আলোচনার আয়োজন করে আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিআরআই।
ইন্টারনেটে সম্প্রচারিত এ অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদ।
মাহবুব-উল-আলম হানিফ ছাড়াও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা জাকিয়া নুর লিপি এবং ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা আলোচনায় যুক্ত হন।
হানিফ বলেন, ‘করোনা সংকটে কর্মহীন হয়ে পড়া মানুষের পাশে সরকারের ত্রাণের পাশাপাশি দলীয়ভাবে আমরা সারাদেশে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। প্রত্যেকটি নির্বাচনী এলাকায় সংসদ সদস্যরা এমনকি আমাদের দলীয় পর্যায়ের নেতারা জেলা, থানা, সভাপতি , সাধারণ সম্পাদক এবং ইউনিয়ন সভাপতি , সাধারণ সম্পাদকসহ আমাদের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগসহ সবাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছে। সরকারের পাশাপাশি প্রত্যেকটা ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড পর্যায়ে খাদ্য ও নগদ অর্থ সহায়তা করা হয়েছে। কৃষকের ধান কাটা থেকে শুরু করে হাসপাতালে রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে। কর্মহীন ও অসহায় মানুষের পাশে দলীয় জনপ্রতিনিধিরা সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রেখেছেন, খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছেন। আর এ কারণেই দেশের কোথাও খাদ্যের অভাব হয়নি।’
ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের সঙ্গে স্থানীয় সরকারের যেসব জনপ্রতিনিধির নাম এসেছে, তাদের বিষয়ে আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে কী ব্যবস্থা নিয়েছে তা জানতে চাওয়া হয়েছিল আলোচনায়।
এই প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, সরকারি ত্রাণের বাইরে তাদের দলীয় সাংসদ সদস্য, উপচেজলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানরা ৯০ লাখ ২৫ হাজার ৩২৭ টি পরিবারকে সহায়তা দিয়েছেন।নগদ টাকা দিয়েছেন প্রায় নয় কোটি, যা ইতোমধ্যে বিতরণ করা হয়েছে। এটা সরকারের সহায়তার বাইরে। দেশে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য পর্যন্ত নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি আছেন ৬১ হাজার ৫৭৯ জন।এ পর্যন্ত ৭২ জন জনপ্রতিনিধি অনিয়ম করেছেন, যা ০.১৩ শতাংশ।
ত্রাণে বিতরণে অনিয়ম সংক্রান্ত বিষয়ে সিনিয়র সাংবাদিক ও জিটিভির প্রধান সম্পাদক সৈয়দ ইশতিয়াক রেজা বলেন, প্রান্তিকের এমন খবর যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার হয়, তখন বড় ধরনের প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। তিনি তৃণমূলে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি সংসদীয় কমিটি গঠনের সুপারিশ জানান। সাংবাদিক ইশতিয়াক রেজা সচিবদের ৬৪ জেলায় ত্রাণ মনিটর নিয়ে প্রশ্ন তোলেন।
জবাবে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, সচিবদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন জেলার। এটা জনপ্রতিনিধিদের কাজের সঙ্গে মোটেই সাংঘর্ষিক নয়। এটা যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত। ত্রাণ বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ আসা অনেক নেতাই নিজের টাকায় ত্রাণের চাল এনেও অভিযোগে ফেঁসেছেন।
কিশোরগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ সৈয়দা জাকিয়া নূর লিপি এই আলোচনায় অংশ নিয়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের প্রতি সদয় হতে আহ্বান জানান।