সাবেক স্বাস্থ্য মন্ত্রী ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের বর্তমান উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক শিল্প মন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
আজ শনিবার (১৩ জুন)বিকেলে নাসিমের মৃত্যুতে নিজ বাসস্থান থেকে গণমাধ্যমে দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় আমির হোসেন আমু মর্মাহত হয়ে নাসিমের প্রতি তার গভীর অনুভূতি প্রকাশ করেন।
আমির হোসেন আমু বলেন , আজকে হঠাৎ করে মোহাম্মদ নাসিমের মৃত্যুর সংবাদ আমাদেরকে আঘাত করেছে । তার এ আকস্মিক অসুস্থতা ও কিছুদিনের মধ্যে মৃত্যু সারা দেশবাসী ও আমাদের দলের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হয়েছে বলে আমি মনে করি । মোহাম্মদ নাসিম একজন দেশপ্রেমিক এবং দেশের মানুষের জন্য একজন জনবান্ধব নেতা ছিলেন । তিনি সব সময় আন্দোলনে অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছেন এবং তিনি বঙ্গবন্ধুর একজন আদর্শ সৈনিক হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছেন । শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করার জন্য এবং তার নেতৃত্বে সফলতা আনার জন্য তিনি অক্ষুণ্ণ পরিশ্রম করেছেন ।
তিনি বলেন , মোহাম্মদ নাসিমের সাথে দীর্ঘদিন একসাথে রাজনীতি করেছি , সংগ্রাম করেছি , সব সময় আমরা একসাথে থাকতাম । আমি এবং নাসিম যখন একসাথে আন্ডারগ্রাউন্ডে ছিলাম , একই বাসায় একই ছাদের নিচে থাকতাম আমরা একই সাথে সমস্ত কর্মসূচি পালন করতাম। ওয়ান ইলেভেনের সময় নাসিমের এরকম স্ট্রোক হয়েছিল পরবর্তীকালে সুস্থ হওয়ার পরেও তার কিছু শারীরিক অসুস্থতা থেকে যায় যার জন্য হাঁটাচলায় সমস্যা হতো । তারপরেও কিন্তু নাসিম থেমে থাকেননি , তিনি ১৪ দলের মুখপাত্র হিসেবে ১৪ দলকে সার্বক্ষণিক সচল রেখেছেন ।
তিনি আরও বলেন, নাসিম ১৪ দল ও আওয়ামীলীগের নানান কর্মসূচী বাস্তবায়ন করার জন্য সারা দেশব্যাপী সফর করতেন । প্রত্যেকটি কাজে তার ছিলো অগ্রণী ভূমিকা । রাজনীতির মাঠে নাসিমের ছিল বলিষ্ঠ ভূমিকা । নাসিম ছিল একজন সত্যিকার অর্থে রাজনীতিবিদ । তাঁর এই আকস্মিক মৃত্যু দলের জন্য, দেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হয়েছে । নাসিমের এই চলে যাওয়া এই অপূরণীয় ক্ষতি পূরণ হবার নয় । তিনি যেভাবে দলকে , দেশকে এবং ১৪ দলের মাধ্যমে আন্দোলন সংগ্রামে যে ভূমিকা রেখে গেছেন তার না থাকাতে এখন এ জায়গাটা ক্ষতিগ্রস্ত হবে ।
আমির হোসেন আমু নাসিমের শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান ও তার বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং মহান রাব্বুল আলামীনের কাছে তার বেহেস্ত নসিব কামনা করে তার বক্তব্য শেষ করেন ।
উল্লেখ্য, রক্তচাপজনিত সমস্যা নিয়ে গত ১ জুন হাসপাতালে ভর্তি হন মোহাম্মদ নাসিম। ওই দিনই তার করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর ৪ জুন তার অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলেও ৫ জুন ভোরে তিনি স্ট্রোক করেন। মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত সমস্যার কারণে দ্রুত অস্ত্রোপচার করে তাকে আইসিইউতে রাখা হয়।এরপর দুই দফায় ৭২ ঘণ্টা করে পর্যবেক্ষণে রাখে মেডিকেল বোর্ড। এর মধ্যেই পরপর তিনবার নমুনা পরীক্ষা করে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি তার শরীরে। মোহাম্মদ নাসিম সরকারের খাদ্য মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন। তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলের মুখপাত্রও ছিলেন তিনি। এর আগে ১৯৯৬-২০০১ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের সময় তিনি একাধিক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন মোহাম্মদ নাসিম।