‘সরকারের নাকি পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন মন্তব্যের জবাবে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘প্রকৃতপক্ষে নেতিবাচক ও অন্ধ সমালোচনানির্ভর রাজনীতির জন্য বিএনপিরই পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে।’
বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) এক ভিডিও বার্তায় তিনি এমন মন্তব্য করেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বক্তৃতা-বিবৃতির মাধ্যমে সরকারের সমালোচনা করা ছাড়া বিএনপির এখন আর কোনও রাজনীতি নেই। অসহায় মানুষ থেকে তাদের অবস্থান এখন যোজন যোজন দূরে। এই সংকটকালে সরকার ও আওয়ামী লীগ কোনও রাজনীতি করছে না। করোনার সংক্রমণ রোধ ও মানুষকে বাঁচানোই হচ্ছে এখন একমাত্র রাজনীতি।’
রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সমন্বয় করে করোনা মোকাবিলা প্রসঙ্গে সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীর কোথাও কি এমন নজির আছে? করোনা প্রতিরোধে চিকিৎসাসেবা প্রদান রাজনীতিদিদের কাজ নয়। যাদের দরকার, সেসব বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি করা হয়েছে। তাদের মতামত নিয়েই সিদ্ধান্ত প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’
কাদের বলেন, ‘যেসব রাজনৈতিক দল দেশের স্বার্থে ভালো পরামর্শ দিতে চান, সরকার তাদের সৎ পরামর্শ গ্রহণ করবে। কোনও ভুল হলে, ভুল সংশোধন করতে শেখ হাসিনা সরকারের সৎ সাহস রয়েছে।’
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশে সরকারি -বেসরকারি হাসপাতালগুলো যখন আক্রান্ত রোগীদের সেবা দানে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। ফ্রন্টলাইন এ কর্মরত যোদ্ধারা যখন জীবন বাজি রেখে কাজ করছে। তখন কিছু হাসপাতাল, ক্লিনিক যে কোন সাধারন সেবায় গেলেও বাধ্যতামূলক করোনা টেস্ট করাচ্ছে; কিংবা করোনার রিপোর্ট ছাড়া চিকিৎসা দিচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ‘এমন পরিস্থিতিতে ঢালাও ভাবে এ ধরনের সিদ্ধান্ত সাধারণ রোগীদের ওপর চাপানো কতটা যৌক্তিক? আমি আপনাদের বিবেকের কাছে প্রশ্ন রাখছি। কোনো, কোনো হাসপাতাল রোগী ভর্তি না করার নানান রকমের ছলচাতুরীর আশ্রয় নিচ্ছে। এ মুহূর্তে এটি মোটেও সমীচীন নয়।’
সড়কমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন, বর্তমানে ৬৬ টি জেলায় করোনা টেস্ট করা হচ্ছে। সরকার পর্যায়ক্রমে প্রতিটি জেলায় টেস্ট সুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে। আমাদের প্রয়োজন টেস্ট সেন্টারসহ চিকিৎসা সংস্থাসমূহে সঠিক সমন্বয় গড়ে তোলা।’
তিনি বলেন, ‘এমন প্রতিকূল সময়েও আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে বর্তমানে ৩৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। রেমিটেন্সের প্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। বৈশ্বিক এ সংকটে অর্থনীতিতে যে ছন্দ পতন, তার ঢেউ আমাদের মতো উদীয়মান অর্থনৈতিকেও আছন্ন করবে; এটাই স্বাভাবিক। অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা ও সামাজিক নিরাপত্তা বিধানে শেখ হাসিনার সরকার নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে বাজেটে। দেশের বেসরকারি খাতে অধিক সংখ্যক কর্মসংস্থান এ সংকটে আমি বেসরকারী প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা প্রতিষ্ঠানসমূহকে জনবল ছাঁটাই না করে মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপনের অনুরোধ জানাচ্ছি।’
১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতি যেমন লক্ষ্য অর্জন করেছে, তেমনই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে পারস্পরিক সহমর্মিতা, ত্যাগ ও স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনের মাধ্যমে উত্তরণের পথে জাতি এগিয়ে যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন ওবায়দুল কাদের।