প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঈদ উপহার পাচ্ছে কর্মহীন, খেটে খাওয়া, হতদরিদ্র ১৪ লাখ প্রান্তিক পরিবার। এই পরিবারগুলোর প্রতিটিকে দুই হাজার ৫০০ টাকা করে দেওয়া হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় কয়েক ধাপে এ টাকা দেশের নানা প্রান্তে পরিবারগুলোকে পৌঁছে দিচ্ছে। এর আগে প্রথম ধাপে ১৬ লাখ ১৬ হাজার ৩৫৬ পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়। সে হিসাবে সব মিলিয়ে ৩০ লাখ পরিবারকে কোরবানির ঈদের আগে নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, করোনাভাইরাসের প্রভাবে কর্মহীন হয়ে পড়া চার কোটি মানুষের মধ্যে প্রান্তিক দুই কোটি মানুষকে নগদ সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ জন্য এক হাজার ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়। প্রতি পরিবারে চারজন ধরে ৫০ লাখ প্রান্তিক পরিবার নগদ দুই হাজার ৫০০ টাকা করে প্রণোদনা পাওয়ার কথা। কিন্তু ৫০ লাখ পরিবারের মধ্যে ২৮ লাখ পরিবারের তালিকাই ছিল ভুলে ভরা। এ কারণে প্রথম ধাপে ১৬ লাখ ১৬ হাজার ৩৫৬ পরিবারে নগদ সহায়তা পাঠানোর পর স্থগিত রাখা হয় বাকি ৩৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬৪৪ পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা পাঠানো।
পরে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে মাঠ পর্যায় থেকে তালিকা সংশোধন করে পাঠাতে বলা হয়। চলতি মাসের শুরুর দিকে সংশোধিত তালিকা অর্থ মন্ত্রণালয়ে এসে পৌঁছে। জাতীয় পরিচয়পত্র, নির্বাচন কমিশনের সার্ভারে রাখা তথ্য, মোবাইল নম্বর, ব্যাংক হিসাব ইত্যাদি যাচাই-বাছাই শেষে অর্থ মন্ত্রণালয় সর্বমোট ১৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬৪৪টি প্রান্তিক পরিবারের তালিকা চূড়ান্ত করে। চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী গত সপ্তাহ থেকে এ পরিবারগুলোকে অর্থ পাঠানো শুরু হয়েছে। নতুন তালিকা অনুযায়ী এসব প্রান্তিক পরিবারকে নগদ সহায়তা দিতে সরকারের ব্যয় হবে ৩৪৫ কোটি ৯১ লাখ ১০ হাজার টাকা। তবে এ জন্য বরাদ্দ রয়েছে ৫০০ কোটি টাকা।
বাকি ২০ লাখ পরিবারের তথ্য যাচাই করে ঈদের পর আবারও অর্থ ছাড় করা হবে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
এ ব্যাপারে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহসীন কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘পর্যায়ক্রমে ৫০ লাখ পরিবারকেই নগদ সহায়তা দেওয়া হবে। এবার মাঠ পর্যায়ের তালিকা ভালোভাবে যাচাই-বাছাই করে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে।’ ২৮ লাখ পরিবারের ভুলে ভরা তালিকার ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। ভুলে ভরা তালিকার সঙ্গে কোনো কর্মকর্তা জড়িত থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এ পর্যন্ত আমরা সে রকম কোনো তথ্য পাইনি।’
জানা গেছে, বাকি ২০ লাখ পরিবারের অনেকেরই ব্যাংক হিসাব কিংবা মোবাইল ব্যাংকিংয়ে কোনো হিসাব খোলা নেই অথবা জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যে গরমিল রয়েছে। তাই ঈদের পর আবারও তালিকা সংশোধন করে নগদ প্রণোদনার অর্থ ছাড় করার উদ্যোগ নেবে অর্থ মন্ত্রণালয়।