এবার নেপালের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তিতে রেল রুট যুক্ত করতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ। দুই দেশের এই বাণিজ্যিক রেল যোগাযোগ হবে ভারতের ওপর দিয়ে। এসংক্রান্ত একটি প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে রেল ট্রানজিটের পথ খুলল। তবে সৈয়দপুরের বিমানবন্দর ব্যবহার করতে চেয়ে নেপাল যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা নিয়ে মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত হয়নি।
গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার ভার্চুয়ালি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বৈঠকের বিস্তারিত জানান মন্ত্রিপরিষদসচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
সচিবালয়ে ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, ‘১৯৭৬ সাল থেকেই নেপালের সঙ্গে বাংলাদেশের ট্রানজিট অ্যাগ্রিমেন্ট আছে। আমাদের চাঁপাইনবাবগঞ্জের রংপুর ও ভারতের সিঙ্গাবাদের মধ্যে যে একটি রেলপথ আছে, তার সঙ্গে এবার যুক্ত হতে চাচ্ছে নেপাল। অর্থাৎ আগের ট্রানজিট অ্যাগ্রিমেন্টের মধ্যেই রংপুর থেকে সিঙ্গাবাদ হয়ে নেপাল তার বীরাজগঞ্জ পর্যন্ত ট্রানজিট সুবিধা চেয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ওঠা এই প্রস্তাবে সম্মতি দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এখন দুই দেশই রোহনপুর ও সিঙ্গাবাদের মাধ্যমে রেলপথে মালপত্র আনা-নেওয়া করতে পারবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের (নেপাল) মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করতে দিচ্ছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, ‘যেহেতু এখানে ইন্ডিয়ার মধ্য দিয়ে (পথটি) আসছে, সেহেতু তারাও (ইন্ডিয়ার) এখানে যুক্ত আছে।’ তিনি জানান, ভূ-রাজনৈতিক বিষয়ের কথা এখানে হয়নি, এটি বাণিজ্যিক বিষয়।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানান, নেপাল সৈয়দপুর এয়ারপোর্ট ব্যবহার করার প্রস্তাব দিয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এটি সেভাবে উপস্থাপন করতে পারেনি। এটি আলোচনার পর্যায়ে আছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ প্রতিবছর নেপালে ৪৮ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে, আর আমদানি করে ১০ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। ভারত হয়ে বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে এই রেল রুটের দূরত্ব ২১৭ কিলোমিটার। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, বাণিজ্যিক যোগাযোগ শুরু হলে দুই দেশই বাণিজ্যিকভাবে উপকৃত হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈদেশিক বাণিজ্য অধিশাখার যুগ্ম সচিব আব্দুছ সামাদ আল আজাদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘এখন দুই দেশের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হবে। এরপর দুই দেশের উদ্যোগে পরীক্ষামূলক যোগাযোগ শেষে নিয়মিত বাণিজ্যিক যাতায়াত শুরু হবে।’
ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদসচিব বলেন, ‘বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভাদ্র মাসের মাঝামাঝি বন্যা এলে দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে, এ জন্য প্রস্তুতি থাকতে হবে, বন্যার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে সতর্ক থাকতে হবে। এ ছাড়া বন্যায় আমনের বীজ নষ্ট হওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।’ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী রোপা আমনের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দিতে বলেছেন।