রিজেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রতারক মো. সাহেদ ওরফে সাহেদ করিম কায়দায় এক ব্যক্তিকে ডেকে এনে মারধর করে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে আওয়ামী প্রজ্ম্ম লীগের সভাপতিসহ তিন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পল্টন থানার পুলিশ।
গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন হলেন আওয়ামী প্রজন্ম লীগের সভাপতি মনির আহম্মেদ ওরফে মনা,মনিরুল ইসলাম লিপু ও প্রিন্স।
জানা যায়, জুয়েল উদ্দিন নামের এক ব্যক্তির মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় ।ওই ব্যক্তির অভিযোগ পাওনা টাকা দেওয়ার নাম করে তাকে মনির আহমেদ আহমেদ ওরফে মনা এর কার্যালয়ে ডেকে এনে ইলেকট্রিক শক দেয়া থেকে শুরু করে বিভিন্ন উপায়ে নির্যাতন করা হয় ,
এরপর মুক্তিপণ হিসেবে তার কাছ থেকে দুই লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়া হয় । জুয়েল উদ্দিন মামলায় সুমন আহম্মেদ খান ও মাহবুবুল ইসলাম মিঠু নামের আরও তিনজনকে আসামি করেছেন এই তিন জন পলাতক।
এদিকে, আওয়ামী প্রজন্ম লীগের সভাপতি মনির আহম্মেদ ওরফে মনা সম্পর্কে গোয়েন্দা এক প্রতিবেদনে ভয়ংকর তথ্য উঠে এসেছে,
মনির আহমেদ মনা তিনি এক সময় ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি নেতা মীর্জা আব্বাসের হয়ে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ক্যাম্পে ভাংচুর করে পরে তা বন্ধ করে দেন।পরে তিনি ২০০৮ সালের দিকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এবং এর পর ২০১৪-২০১৫ সালের দিকে বাংলাদেশে আগমন করে প্রজন্মলীগ নেতা পরিচয় দিয়ে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নেতা হিসেবে উথান,তারপর তার আর তাকে পেছনে তাকাতে হয়নি
প্রতিবেদনে আরো উঠে এসেছে, তিনি এলাকায় মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ, চাদাবাজী ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে দখলবাজী করে কোটি কোটি টাকার মালিক। তার বিরুদ্ধে একাধিক জিডি ও মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।
তার রয়েছে একটি লাইসেন্স করা রিভলবার ও একটি শর্টগান রয়েছে। শর্টগানটি লাইসেন্সবিহীন বলে ধারণা।
অনুসন্ধানে আরও জানা যায় তার বিরুদ্ধে একাধিক চাঁদাবাজির মামলা এবং এই ভুঁইফোড় সংগঠনের প্রভাব খাটিয়ে এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাথে ছবি তুলে মানুষের সাথে বহুদিন ধরে প্রতারণা করে আসছেন তিনি।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক, এক ব্যক্তি বলেন, মনা প্রতারণা করা তার ব্যবসা, তিনি এই ভুঁইফোড় সংগঠনের নাম করে বিভিন্ন জায়গায় থেকে চাঁদাবাজি করেন মানুষকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করে থাকেন কেউ তার ভয়ে মুখ খোলেন না।
অন্যদিকে, এই ভুইঁফোড় সংগঠন সম্পর্কে সতর্ক করে তিনি বলেন,অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ভুঁইফোড় এসব সংগঠন ও নেতাদের ‘মৌসুমি চাঁদাবাজ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তিনি বিভিন্ন সময় বলেন, ‘সবচেয়ে ব্যথিত হই বঙ্গবন্ধুর ছবির পাশে চিহ্নিত চাঁদাবাজ-ধান্দাবাজ, টাউট-বাটপাড়দের ছবি দেখলে। বঙ্গবন্ধুর ছবির পাশে এসব ভূমি দখলকারী ও লুটপাটে জড়িতদের ছবি আর দেখতে চাই না। নেতাকর্মীদের বলব, এগুলো ছিঁড়ে ফেলুন।’
সম্প্রতি ভুঁইফোড় এসব সংগঠনের দৌরাত্ম্য বেড়েছে। অনুসন্ধানে এ ধরনের শতাধিক সংগঠনের অপতৎপরতা দেখা গেছে। রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনই এসব সংগঠনের একাধিক অনুষ্ঠানে নির্দিষ্ট কয়েকজন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও সাইডলাইনে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাসহ দল সমর্থক কিছু ব্যবসায়ী নিয়মিত হাজির হচ্ছেন। মিডিয়া কাভারেজ প্রত্যাশী এসব ব্যক্তি যেমন অর্থের বিনিময়ে কর্মসূচিগুলোতে প্রধান কিংবা বিশেষ অতিথি হচ্ছেন, তাদের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজিও চলছে। ‘পদক’ কিংবা ‘সংবর্ধনা’ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে উঠতি কিছু নেতা ও ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা নিয়েও ‘পদক বাণিজ্যে’ লিপ্ত কয়েকটি সংগঠন।
আওয়ামী লীগ সরকারের দুই মেয়াদের সাড়ে ছয় বছরের মাথায় ভুঁইফোড় সংগঠন নেতাদের অনেকে বাড়ি-গাড়ির মালিক হয়ে গেছেন। কারও কারও বিরুদ্ধে কর্মসূচির নামে চাঁদাবাজির পাশাপাশি টেন্ডারবাজিতে জড়িয়ে পড়ারও অভিযোগ ।