কৃষক লীগের উদ্যোগে “স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী”, সভা ও দোয়া মাহফিল

দিপু মনি

আজ সকাল ১০:০০ টায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫ তম শাহাদাত বার্ষিকী “জাতীয় শোক দিবস-২০২০” উপলক্ষে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কৃষক লীগের উদ্যোগে ১৯, বঙ্গবন্ধু এভিনিউ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে “স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচী”, আলোচনা সভা, এতিম-অনাথদের মাঝে মৌসুমী ফল বিতরণ ও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সহ পরিবারের সকল শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ কৃষক লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুস সালাম বাবু’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুল রব খান এর সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ডা. দীপু মনি তার বক্তব্যের শুরুতে বঙ্গবন্ধুর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং ১৫ আগস্টে ঘাতকের গুলিতে নিহত সকল শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। তিনি বলেন, তাদের ভয় ছিল বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে। পৃথিবীর ইতিহাসে কোথাও এধরণের নারকীয় হত্যাকান্ডের নজির নেই। ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মাধ্যমে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শত্রুরা দেশকে নেতৃত্ব শূণ্য করার জন্য ৩ রা নভেম্বর জাতীয় ৪ নেতাকে হত্যা করেছিল। এমনকি ২০০৪ সালে ২১ আগস্ট বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভাপতি কৃষকরত্ন শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ এ ১৩ টি গ্রেনেড হামলা করে ২৪ জন নেতাকর্মীকে হত্যা করে।

বঙ্গবন্ধুর ৪৫তম শাহাদাত বার্ষিকীতে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কৃষক লীগের আজকের এই উদ্যোগের প্রশংসা করে প্রধান অতিথি বলেন, কৃষক লীগ করোনা কালেও কৃষকের ধান কেটে গোলায় তুলে দিয়ে মানবতার স্বাক্ষর রেখেছে। এছাড়াও সারাদেশে বৃক্ষরোপনের মত একটি যুগান্তকারী কর্মসূচী পরিচালিত করায় তিনি সংগঠনের নেতৃবৃন্দকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। ১৯৭৫ পরবর্তী শুধুমাত্র আওয়ামী লীগ করার কারণে লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীদেরকে হত্যা ও নির্যাতন করা হয়েছিল। যুদ্ধাপরাধিদেরকের রাজনীতিতে পুনর্বাসন করেছিলেন জিয়াউর রহমান। বাংলাদেশ সহ সারা দেশকে দুঃশাসনে পরিনত করেছিল। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ সহ সকল কিছু সেদিন নিষিদ্ধ করেছিলেন জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে যখন দেশে ফিরে আসেন তখন তার সুযোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সহ ঘুরে দাড়িয়েছিলেন নেতাকর্মীরা। আজকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কৃষিতে বিপ্লব সাধিত হয়েছে এবং দেশ আজকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে। দেশ খাদ্যে সয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পিছনে কৃষক লীগের ব্যাপক অবদান রয়েছে, এজন্য তিনি কৃষক লীগকে ধন্যবাদ জানান। দেশ আজকে শিক্ষাখাতে আমুল পরিবর্তন হয়েছে। স্বাস্থ্য সেবায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিরলসভাবে কাজ করছেন। আজকে বিশ্ববাসি যখন জানতে চায় এই উন্নয়নের ম্যাজিক কি? আমাদের উন্নয়নের মূল ম্যাজিক জননেত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্ব। দলে অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে ,বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কর্মীদেরকে দলে নিয়ে দায়িত্ব দিতে হবে।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ। বাংলাদেশ কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ তার বক্তব্যের শুরুতে ১৫ আগস্টে নিহত সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। তিনি বলেন, ৭১ এর পরাজিত শক্তিরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয় নাই তারা বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসূরি কৃষকরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনাকে ২১ বার হত্যার প্রচেষ্টা চালিয়েছে।

কৃষক লীগের নেতাকর্মীদের তিনি সজাগ দৃষ্টি রেখে নেত্রীর নিরাপত্তা ও কৃষক সমাজের উৎপাদনের সহযাত্রী হিসাবে একসাথে কাজ করার পরামর্শ দেন। কৃষক লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ গড়ার আহ্বান জানান। তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রানিত হয়ে উন্নয়ন ও উৎপাদনে কৃষকের কল্যাণে আজীবন কাজ করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। অতঃপর অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি মাননীয় শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি এমপি রক্তদান কর্মসূচী উদ্বোধন ও এতিম-অনাথদের মাঝে মৌসুমী ফল বিতরণ করে অতিথিবৃন্দদের নিয়ে রক্ত সংগ্রহ ক্যাম্প পরিদর্শন করেন এবং অনুষ্ঠানে আগত এতিম-অনাথদের মাঝে মৌসুমী ফল বিতরণ করেন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের মাঝে বক্তব্য রাখেন শেখ জাহাঙ্গীর আলম, আকবর আলী চৌধুরী, এম.এ ওয়াদুদ মিয়া, কৃষিবিদ ড. নজরুল ইসলাম, কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটু, মোঃ আবুল হোসেন, আলহাজ্ব মোস্তফা কামাল চৌধুরী, গাজী জসিম উদ্দিন,  নাজমুল ইসলাম পানু, রুমানা আলী টুসি এমপি,  সৈয়দ সাগিরুজ্জামান শাকীক, হিজবুল বাহার রানা, রেজাউল করিম রেজা, ডা. মজিবুর রহমান মিয়াজী, কৃষ্ণ গোপাল, আলমগীর হোসেন, মহানগর দক্ষিণ কৃষক লীগের আহসান উল হক পলাশ, জহিরুল ইসলাম, মনির হোসেন জিন্নাহ, নজরুল ইসলাম বাচ্চু, এম.এ মান্নান, আসলাম ভূইয়া সহ মহানগর নেতৃবৃন্দ।

অতঃপর ১৫ আগস্টের হত্যাকান্ডে শাহাদাত বরণকারী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সহ সকল শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত শেষে তবারক বিতরণ করা হয়। দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন মাওলানা ইব্রাহিম।