মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেছেন, “গ্রামীণ অর্থনীতিকে সচল করতে মৎস্য খাত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। মৎস্য খাতের একটা প্রকল্পের মাধ্যমে একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ের একজন মানুষকে কর্মক্ষম করে তুললে তার বেকারত্ব দূর হবে, সে নিজে উদ্যোক্তা হবে, স্বাবলম্বী হবে এবং তার দারিদ্র্য দূর হবে। এভাবে অর্থনীতির উপর ঢাকামুখীতা বা বড় বড় শহরমুখীতার চাপ কমে যাবে। পাশাপাশি এ খাতের মাধ্যমে আমাদের পুষ্টি ও আমিষের চাহিদাও পূরণ হচ্ছে।”
বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) রাজধানীর রমনাস্থ মৎস্য ভবনে মৎস্য অধিদপ্তরের সম্মেলন কক্ষে তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ২০১৯-২০ অর্থবছরে সংশোধিত বর্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত মৎস্য উপখাতের উন্নয়ন প্রকল্পসমূহের জুন, ২০২০ পর্যন্ত বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় এসব কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব রওনক মাহমুদ, বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান কাজী হাসান আহমেদ, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, যুগ্ম সচিব তৌফিকুল আরিফ ও যুগ্ম প্রধান লিয়াকত আলী, মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী শামস্ আফরোজসহ মৎস্য অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালকগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, “১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনেক দূরদৃষ্টি দিয়ে এক সাক্ষাতকারে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পুনর্গঠন প্রসঙ্গে বলেছিলেন আমার আছে লাইভস্টক, আমার আছে মাছ। মাছ ও মাছজাতীয় পণ্য এখন বিদেশে রপ্তানির সাথে সম্পৃক্ত। মৎস্যকে কেন্দ্র করে এখন নানা প্রকল্প হচ্ছে, বিভিন্ন শিল্প গড়ে উঠছে। এভাবে মৎস্য খাতকে আমরা বহুমুখী ব্যবহারের একটা ক্ষেত্র করতে পেরেছি। এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অবদান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।”
মৎস্য উপখাতে চলমান প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, “অর্পিত দায়িত্বকে মনে-প্রাণে গ্রহণ ও ধারণ করুন। নিজেদের যোগ্যতা তুলে ধরার চেষ্টা করুন। অনিয়ম ও অস্বচ্ছতা সম্পূর্ণরূপে পরিহার করতে হবে। প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের তালিকা প্রস্তুতে অস্বচ্ছতা দূর করতে হবে। প্রকল্পের ধারবাহিক রেকর্ড সংরক্ষণ করতে হবে। প্রকল্পের কাজে গতি বাড়াতে হবে। অনিবার্য কারণে সময় বৃদ্ধি করা হলেও ব্যয় বৃদ্ধি কোনভাবেই করা হবে না। ক্রান্তিকালীন দায়িত্বে অবহেলা অমার্জনীয় হবে।”
মৎস্য খাত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের মন্ত্রী আরো বলেন “আপনাদের কারিগরী সক্ষমতা, বিদ্যার সক্ষমতা টেবিলকেন্দ্রিক কাজে ব্যবহার না করে ব্যবহারিক ক্ষেত্রে প্রয়োগ করতে হবে। বিলুপ্তপ্রায় দেশীয় মাছকে ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন। এটাকে ধারণ করতে হবে।”
সভায় ২০১৯-২০ অর্থবছরে সংশোধিত বর্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্ত মৎস্য উপখাতের মোট ১৩টি প্রকল্পের জুন, ২০২০ পর্যন্ত অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হয়। উক্ত ১৩টি প্রকল্পে সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ ছিলো ৩৯৩ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা। এর বিপরীতে জুন, ২০২০ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ২৭৪ কোটি ৯১ লক্ষ টাকা।