২১ আগস্ট সম্পর্কে ‘মিথ্যাচারের কোরাস’ গাইছে সরকার : রিজভী

‘সরকার দিশেহারা’ হয়ে ২১ আগস্টের ঘটনা সম্পর্কে ‘মিথ্যাচারের কোরাস’ গাইছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।  তিনি অভিযোগ করেন, ‘তারা (সরকার) কাল থেকে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা নিয়ে মিথ্যাচার করছে মানে অল্পস্বল্প নয়। কোরাস গাইছেন। গানে যেমন এক সাথে কোরাস গায় এভাবে কোরাস গাইচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীসহ অন্য মন্ত্রীরা। আমরা বলতে চাই, এসব কথা বলে মানুষকে চিড়ে ভিজানো যাবে না। মানুষ যা বুঝার তা বুঝে গেছে। আপনি ক্ষমতা দিয়ে, দুঃশাসন দিয়ে এসব কথা বলছেন।’শনিবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এই অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, ‘একটা কথা আছে, হঠাৎ যদি একটা গরিব মানুষ অনেক টাকা পেয়ে যায় সে ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে, পাগল হয়ে যায়। প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের নেতারা এতো ক্ষমতা পেয়েছেন, এতোদিন ক্ষমতায়-এখন দিশেহারা হয়ে গেছে। কী করবে তারা? এতো ক্ষমতা, এতো টাকা চারিদিকে। এজন্য এখন একটু হাফ পাগল হয়ে গেছে। আবোল-তাবোল, অমুক-তমুক কথা বলে বেড়াচ্ছে।’

২১ আগস্টের ঘটনা আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের ফল মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকে দেখেছি এই ২১ আগস্ট নিয়ে বর্তমান সরকার সেই সময়ে বিরোধী দলীয় নেতা তখন থেকে একটা ডাইভার্ট করার, আসল ঘটনাটাকে ঢেকে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। ২১ আগস্টের পরিকল্পনা আপনাদের। এই পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে বিএনপি’র ভাবমূর্তি নষ্ট করা এবং ছলে-বলে কৌশলে ক্ষমতায় এসে বিএনপি নেতৃবৃন্দকে বিপর্য্স্ত করা, বিএনপি নেতৃবৃন্দকে ফাঁসানো হয়েছে।

এটা একটা বড় ধরনের আওয়ামী লীগের দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের ফল হচ্ছে ২১ আগস্ট বোমা হামলা এবং তারপরে বিচারিক প্রক্রিয়া। আওয়ামী লীগ পরিকল্পিতভাবে ঘটনা ঘটিয়েছে সেজন্য তারা ক্ষমতায় এসে ওই মাস্টার প্ল্যান অনুযায়ী তা বাস্তবায়নের জন্য তাদের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তাকে দিয়ে তদন্ত করিয়েছে।’

বিচার ব্যবস্থার প্রসঙ্গ টেনে রিজভী বলেন, ‘বিচারিক প্রক্রিয়া আপনারা দেখছেন। সই নাই, স্বাক্ষর নাই, কোনো কিছু নাই। তারপরেও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে কারাগারে রেখেছে। ন্যায় বিচার- দূরের তারার মতো দেখতে হয়। ওই যে দূরের যে তারা দেখা যাচ্ছে ওইটা বোধহয় ন্যায় বিচার। ছোঁয়া যায় না, ধরা যায় না, কাছে যাওয়া যায় না সেটা হচ্ছে ন্যায় বিচার। কত দূরে চলে গেছে ন্যায় বিচার।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের তো আর কিছু করার নাই, বলার নেই। কী করবে? এসব বলে জনগণের মধ্যে নিজেদের একটু বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছে। নিজেদের রাজনৈতিকভাবে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করছে, টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছে যে ব্লেইম দিয়ে।’

নয়া পল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের উদ্যোগে করোনাকালে মারা যাওয়া বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়াল খান, মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক আহসানউল্লাহ হাসান, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি শফিউল বারী বাবুসহ নেতা-কর্মীদের স্মরণে এই আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল হয়। মিলাদের পর পরলোকগত নেতাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত পরিচালনা করেন উলামা দলের সদস্য সচিব অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম তালুকদার।

মৎস্যজীবী দলের আহবায়ক রফিকুল ইসলাম মাহতাবের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবদুর রহিমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিএনপি’র মীর সরফত আলী সপু, আবদুস সালাম আজাদ, রফিকুল ইসলাম, এম এ খালেক, স্বেচ্ছাসেবক দলের আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।