সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেছেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর জাতির পিতা হয়ে ওঠার পেছনে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের ছিল ভীষণ অবদান। শুধু তাই নয়, বঙ্গবন্ধুর জীবনাদর্শ ও কর্ম নতুন প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার পেছনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে বঙ্গবন্ধুর রচিত তিনটি ঐতিহাসিক বই যথাক্রমে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও ‘আমার দেখা নয়াচীন’।
এ তিনটি বই লেখায় বঙ্গবন্ধুকে যিনি সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত ও উদ্বুদ্ধ করেছিলেন তিনি তাঁরই সহধর্মিণী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা। তিনি ছিলেন বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত সহচর ও মুক্তিসংগ্রামের অন্যতম সহযোদ্ধা। জাতির পিতার রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনে সর্বক্ষণের সহযোগী ও অনুপ্রেরণাদাত্রী বঙ্গমাতা ছিলেন ত্যাগ ও সুন্দরের সাহসী প্রতীক।
প্রতিমন্ত্রী আজ বিকালে রাজধানীর ফার্মগেটস্থ বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল মিলনায়তনে স্বাধীনতার সুমহান স্থপতি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোকদিবস ২০২০ উপলক্ষে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশন আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের নির্বাহী সভাপতি কৃষিবিদ মো. হামিদুর রহমান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রী কৃষিবিদ ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক এমপি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে আরো বক্তৃতা করেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি।
সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান ছিলেন বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে সবচেয়ে বেশি সুবিধাভোগী। তাঁরই প্রত্যক্ষ মদদে ও পরিকল্পনায় বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছিল। এমনকি তথাকথিত বঙ্গবন্ধুপ্রেমী জাসদও বঙ্গবন্ধু হত্যায় প্ররোচনা জুগিয়েছিল যদিও জাসদ এটিকে তাদের ঐতিহাসিক ভুল বলে অ্যাখ্যা দেয়। ‘৭৫ পরবর্তী ৬ বছর জাতি নেতৃত্বশূন্য ছিল উল্লেখ করে কে এম খালিদ বলেন, ১৯৮১ সালের ১৭মে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করে এদেশের হাল ধরেন।
তাঁর যোগ্য নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ সমগ্র বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। তিনি বলেন, জাতির পিতা কৃষিবিদদের যোগ্য সম্মান দেখিয়ে দেশে কৃষি বিপ্লব সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর দেখানো পথ অনুসরণ করে তাঁরই সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দক্ষ, বলিষ্ঠ ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশে আজ কৃষি বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে এবং খাদ্য ঘাটতির দেশ হতে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কৃষিবিদ রওনক মাহমুদ এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশন এর নির্বাহী সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ বদিউজ্জামান বাদশা। আলোচনায় আরো অংশগ্রহণ করেন জাতীয় সংসদ সদস্য হোসনে আরা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল মুঈদ, একুশে পদকপ্রাপ্ত কৃষিবিদ ড. জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
বঙ্গবন্ধুকে নিবেদিত কবিতা আবৃত্তি করেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট আবৃত্তি শিল্পী হাসান আরিফ। ‘বিদীর্ণ করেছ বাংলাদেশের বুক’ শিরোরামে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) হাসানুজ্জামান কল্লোল।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৫ আগস্টের শহিদদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। তাছাড়া শহিদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করা হয়।