নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, পাওয়ার প্ল্যান্ট, ইকোনমিক জোন বা অন্য কোন উন্নয়নের কথা বলে নদী দখল করা যাবে না। আমরা নদীর অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করছি। ব্যবসায়িক স্থাপনাকে ঘিরে কেউ নদীর জায়গা দখল করতে চাইলে তা কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না।
শনিবার ঢাকা-বরিশাল নৌপথের চাঁদপুর লক্ষ্মীরচর-আলুরবাজার-ঈশানবালা নৌপথ পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অতিরিক্ত স্রোত ও পলি জমে যাওয়ার কারণে নদী ভরাট হয়ে আমাদের বরিশালে রুটের মিয়ারচরেও নৌপথও বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এখন আমাদের ভোলার ইলিশা দিয়ে ঘুরে বরিশাল যেতে হচ্ছে। সেই অবস্থায় আলু বাজার থেকে হিজলা হয়ে নৌপথ হয় কিনা সেটা নিয়ে আমাদের মন্ত্রণালয়ের পক্ষে দুটি সভা করেছি। সভায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি কিভাবে ড্রেজিং করলে নৌ চলাচল করতে পারবে। সবশেষ সার্ভে রিপোর্টে আশ্বস্ত হয়েছি, আগে যে সকল ছোট ছোট লিঙ্ক নৌপথ আছে সেগুলো সচল করতে পারি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ঢাকা-বরিশাল নৌপথের মিয়ারচর, কালীগঞ্জ ও আলু বাজার এই তিন চ্যানেলের কোন নৌ রুটই বাদ দিচ্ছি না। মিয়ারচরে যে পথটা আছে তা আমরা ড্রেজিং করে চালু করবো। পাশাপাশি আলুবাজার চ্যানেলটিও চালু রাখতে চাই। আমরা ঢাকা-বরিশাল নৌপথে বহুমাত্রিক পথ (লিঙ্ক) রাখতে চাই। কারণ কোন কারণে যদি প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়; তাহলে আমরা যেন বিকল্প পথ ব্যবহার করতে পারি। সেই জন্য সব পথ চালু করতে চাই।
খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আমাদের শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী রুটে ফেরি চলাচল আটদিন বন্ধ ছিলো। কারণ অতিরিক্ত স্রোত ও পলি জমে যাওয়ার কারণে নদী ভরাট হয়ে যাচ্ছে এবং পথগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী ফেরিরুটে গতকাল আমরা রো রো ফেরি চালিয়েছিলাম কিন্তু তা ঠিকমতো চালাতে পারি নাই। সেখানে ‘কে-টাইপ’ (ছোট) ফেরি চলছে। শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ী ফেরির রুটটি যেহেতু পদ্মাসেতুর কাছাকাছি তাই বিআইডব্লিউটিএর পক্ষে ড্রেজিং করার সুযোগ নাই।
তিনি বলেন, সড়ক ও সেতুমন্ত্রী এবং সচিবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। এখন পদ্মাসেতু কর্তৃপক্ষ ড্রেজিং বসিয়েছে এবং ড্রেজিং করছে। আমাদের ১০টি ড্রেজার কাজ করছে, আজকেও একটি ড্রেজার যুক্ত হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা যখন নৌপথ তেরি করতেছিলাম, তখন শিমুলিয়ায় আবারও ভাঙন দেখা দিয়েছে। এটাও আমাদের জন্য একটা চ্যালেঞ্জ। কাজেই এখানে বিআইডব্লিউটিএর সঙ্গে বিআইডব্লিউটিসির কোন সমন্বয়হীনতা নেই। যখনই পথ তৈরি হবে তখনই ফেরি চালু হবে। এখানে আমাদের নৌপথের থেকেও প্রথম গুরুত্ব দিতে হবে স্বপ্নের পদ্মাসেতুর বিষয়ে। পদ্মাসেতুর কার্যক্রম বিঘ্নিত করে, পদ্মাসেতুকে ঝুঁকিতে ফেলে আমরা কোন পথ তৈরি করতে চাই না।
প্রতিমন্ত্রী পরে হিজলা লঞ্চঘাটে হিজলা উপজেলা আওয়ামী লীগ আযোজিত জনসভায় বক্তব্য রাখেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য পঙ্কজ দেবনাথ, বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক, বিআইডব্লিউটিএর সদস্য (পরিচালনা ও পরিকল্পনা) মো. দেলোয়ার হোসেন, প্রধান প্রকৌশলী (ড্রেজিং) আবদুল মতিন, পরিচালক (বন্দর ও পরিবহন) কাজী ওয়াকিল নেওয়াজ, পরিচালক (নৌ নিরাপত্তা) মো. রফিকুল ইসলাম প্রমুখ।