গৌরবের ইতিহাস তুলে ধরবে ‘ভালোবাসা প্রীতিলতা’: তথ্যমন্ত্রী

ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামে প্রাণদানকারী উপমহাদেশের প্রথম নারী বিপ্লবী প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদার স্মরণে নির্মিতব্য ‘ভালোবাসা প্রীতিলতা’ চলচ্চিত্রটি নতুন প্রজন্মের কাছে গৌরবময় ইতিহাস তুলে ধরবে বলেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে তথ্য ভবন মিলনায়তনে তথ্য মন্ত্রণালয়ের ২০১৯-২০ অর্থবছরের অনুদানে সেলিনা হোসেনের উপন্যাস অবলম্বনে নির্মিতব্য এ চলচ্চিত্রের মহরত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী একথা বলেন।

কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরিন আখতার। আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স. ম. গোলাম কিবরিয়া ও সংস্কৃতি সংগঠন আমিন হেলালী। ‘ভালোবাসা প্রীতিলতা’ চলচ্চিত্রের পরিচালক প্রদীপ ঘোষ, সংগীত পরিচালক বাপ্পা মজুমদার ও অভিনেতা মান্নান হীরা নির্মিতব্য সিনেমাটির ওপর আলোকপাত করেন।

ইতিহাসের দিকে তাকিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সেই সময় যখন নারীরা ঘরের মধ্য থেকে বের হতো না, তখন মেধাবী প্রীতিলতা যেভাবে আন্দোলনের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন, সেটি সমগ্র উপমহাদেশে একটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। আজ প্রীতিলতাকে নিয়ে সিনেমা নির্মিত হচ্ছে এবং আশা করা যায় যে, এটি দেশের সীমানা ছাড়িয়ে ভারত ও অন্যান্য দেশেও প্রদর্শিত হবে। সুন্দরভাবে নির্মিত হলে এটি ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করবে এবং নতুন প্রজন্ম যারা ত্রিশের দশকে বিপ্লবী আন্দোলনের ইতিহাস জানেন না, তাদেরকে ঠিক ইতিহাস জানানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, বলেন তিনি।

ড. হাছান বলেন, চলচ্চিত্র শুধু বিনোদন নয়, শুধু ইতিহাস নয়, এটি মানুষকে উদ্দীপ্ত করে। প্রত্যেকটি চলচ্চিত্রে একটি বার্তা থাকতে হবে। আজ অনেক মানুষ শুধু নিজেকে নিয়ে ভাবে, অথচ প্রায় শতবর্ষ আগে প্রীতিলতা নিজের জীবনকে বিলিয়ে দিয়েছেন দেশের জন্য। ব্রিটিশদের হাতে নিহত পুরুষবেশী প্রীতিলতার পকেটে উপমহাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ৩২ পৃষ্ঠার জবানবন্দি পাওয়া গিয়েছিল। সেই জবানবন্দি বই পুস্তকে আছে। প্রীতিলতা তেমনই একজন বিপ্লবী ছিলেন।

মন্ত্রী বলেন, আমাদের এই দেশে সিনেমা শিল্পের যাত্রা শুরু হয়েছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ১৯৫৭ সালে এফডিসি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা একজন সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষ। তার পরিবারের মধ্যে সংস্কৃতি চর্চা হতো।

এফডিসি কালজয়ী শিল্পীর জন্ম দিয়েছে উল্লেখ্য করে বলেন, প্রতিষ্ঠার পর আমাদের দেশে ছবি নির্মাণ শুরু হয় এবং বহু কালজয়ী ছবি নির্মিত হয়েছে যে ছবিগুলো স্বাধিকার আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও স্বাধীনতা পরবর্তীকালে দেশ গঠনে বিরাট ভূমিকা রেখেছে এবং বহু কালজয়ী শিল্পীর জন্ম দিয়েছে। কিন্তু আজকে চলচ্চিত্রে সেই পরিস্থিতি নাই। আমাদের লক্ষ্য চলচ্চিত্রের পুরোনো সেই দিন ফিরিয়ে আনা।

কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, বিশেষ অতিথি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শিরিন আখতার এবং আমন্ত্রিত বক্তারা ভালোবাসা প্রীতিলতা চলচ্চিত্রের সুন্দর নির্মাণ ও সাফল্য কামনা করেন।চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মো: জসীম উদ্দীন, সচিব মমিনুল হক, চলচ্চিত্রের অভিনয় শিল্পী ও কুশলীবৃন্দের মধ্যে নুসরাত ইমরোজ তিশা, মান্নান হীরা, মোস্তফা কামাল পাশা প্রমুখ এসময় অতিথিবৃন্দের সাথে আলোকচিত্র ধারণে অংশ নেন।