প্রধানমন্ত্রী বলেন, কবি সুকান্তের ভাষা সর্বদা মনে রাখি, পালনে আমি প্রাণপণ চেষ্টা করছি। কবির ভাবে, এ বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার অঙ্গীকার। শিশুরা যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে, চলতে পারে, উন্নত জীবন পেতে পারে। সুন্দর জীবন পেতে পারে, নিরাপদ জীবন পেতে পারে। আর শিক্ষা দীক্ষায় সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়।
সোমবার সকালে বিশ্ব শিশু অধিকার দিবস এবং শিশু অধিকার সপ্তাহ-২০২০’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য রাখেন। এতে সভাপতিত্ব করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা।
এসময় ১৫ আগস্ট কালরাত্রিতে নিহত পরিবারের সদস্য ও শিশুদের হারানো কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আমার ছোট ভাই ছিল মাত্র ১০ বছরের একটি শিশু। ঘাতকের দল তাকেও ছাড়েনি। সেই সঙ্গে আরও কয়েকজন শিশুকে তারা হত্যা করে। আমার ফুফাত ভাইয়ের ছেলে ছোট শিশু সুকান্ত; তাকেও হত্যা করেছে। আমার ফুফাতো ভাই ১০ বছরের আরিফ, রাসেলের খেলার সঙ্গী তাকেও হত্যা করেছে। আমাদের বাড়িতে কাজ করতে পোটকা এবং পোটকার মা, ছোট্ট বাচ্চা ছেলে মাত্র ৫/৬ বছর বয়স। তাকেও খুনিরা ছাড়ে নাই।’
‘আর কখনও যেন এই ধরনের ঘটনা না ঘটে। সেটাই আমরা চাই। কিন্তু তারপরও আমরা দেখি বিশ্বের নানা ধরনের সংঘাত, যখন দেখি কোনো শিশুর অকাল মৃত্যু সেটা সত্যি আমাকে ভীষণভাবে নাড়া দেয়। সেটা আমার দেশেই হোক, বা বিদেশেই হোক, বঙ্গোপসাগরেই হোক, ভূমধ্যসাগর পাড়েই হোক, প্রতিটি ঘটনাই আমাদের নাড়া দেয়। কিন্তু আমরা চাই, শিশুদের জন্য এই পৃথিবীটা একটা নির্ভরযোগ্য, শান্তিপূর্ণ বাসযোগ্য স্থান হোক’, বলেন প্রধানমন্ত্রী।
এসময় স্বাধীনতার পর জাতির পিতার নেতৃত্বে শিশু অধিকার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নানামুখী পদক্ষেপ তুলে ধরেন। আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন মেয়াদে তার সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
করোনায় স্কুল বন্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা অবসাদের ভুগছেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী অভিভাবকদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা অন্ততপক্ষে এই করোনাভাইরাস যেহেতু স্কুলে যেতে পারছে না তাই বাচ্চাদের অন্তত কাছাকাছি কোনো পার্কে, বা কোথাও আপনাদের বাচ্চাদের দিনে এক ঘণ্টার জন্য হলেও তাদের একটু নিয়ে যাবেন। স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনেই চলতে হবে। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে বাচ্চাদের একটু খেলাধুলার ব্যবস্থা করা বা তাদের একটু খোলা বাতাস, খোলা রোদে খেলতে দেয়া, এটা এই করোনাভাইরাস প্রতিরোধের জন্য সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে করি।