বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র: মেম্বারসহ গ্রেপ্তার ২

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় এক নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় একলাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগ (৪৮), ও মামলার এজাহারের ৫ নম্বর আসামি মো. সাজুকে (২১) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বেগমগঞ্জ থানার ওসি হারুনুর রশিদ চৌধুরী বলেন, সোমবার রাত আড়াইটার দিকে ঢাকার শাহবাগ এলাকা থেকে সাজুকে গ্রেপ্তার করেছে নোয়াখালী জেলা পুলিশের একটি টিম। তিনি পূর্ব এখলাসপুর গ্রামের লোকমান হোসেনের ছেলে। এর আগে রাত সাড়ে ১২টার দিকে বেগমগঞ্জ উপজেলার জয়কৃষ্ণপুর গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে মেম্বার মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগকে গ্রেপ্তার কেরা হয়েছে।

ওসি বলেন, জবানবন্দিতে নির্যাতনের শিকার ওই নারী অভিযোগ করেছেন, ঘটনাটি ঘটার কয়েকদিন পর তিনি বিষয়টি ইউপি সদস্যের বাড়িতে গিয়ে জানান। কিন্তু ইউপি সদস্য তাকে চুপ থাকতে বলে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।

ওসি জানান, মঙ্গলবার দুপুরে গ্রেপ্তারদের আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।

উল্লেখ্য, গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ভুক্তভোগী গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন এবং নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে একদল যুবক। ঘটনার এক মাস পর রোববার দুপুরে নির্যাতনের ওই ভিডিও কেউ একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেন। মুহূর্তের মধ্যে তা ছড়িয়ে (ভাইরাল) পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশও তৎপর হয়ে ওঠে।

পুলিশ জানতে পারে, স্থানীয় দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড বাদল এবং কর্মী রহিম, সুমনসহ পাঁচ-ছয়জন গৃহবধূর সঙ্গে এমন বর্বর আচরণ করেছে।

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ওসি হারুনুর রশীদ জানান, এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার নারী বাদী হয়ে রোববার রাতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৯ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৭-৮ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন- বাদল, মো. রহিম, আবুল কালাম, ইস্রাফিল হোসেন, সাজু, সামছুদ্দিন সুমন, আবদুর রব, আরিফ ও রহমত উল্যা। তাদের সবার বাড়ি বেগমগঞ্জে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই গৃহবধূর বিয়ে হয় বছর তিনেক আগে। স্বামী তাকে রেখে দ্বিতীয় বিয়ে করে অন্যত্র বসবাস করতে থাকে। দীর্ঘদিন স্বামীর কোনো যোগাযোগ ছিল না। গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে স্বামী তার সঙ্গে দেখা করতে আসে। মাদক ব্যবসায়ী দেলোয়ার বিষয়টি জানতে পেরে তার লোকজন নিয়ে রাত ১০টার দিকে গৃহবধূর ঘরে প্রবেশ করে ‘অনৈতিক’ কাজের অভিযোগ এনে তাকে মারধর শুরু করে। একপর্যায়ে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে তারা।

এক মিনিট ২৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিও ফুটেজ দেখে অনেকেই অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।