কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন গবেষণাধর্মী স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ফলিত পুষ্টি গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (বারটান)-এ প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাকে প্রেষণে নিয়োগ দেয়ায় তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে অত্র প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীদের মধ্যে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠানের সাথে সংশ্লিষ্টতা নেই এমন জনবলকে গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠানে প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে নিয়োগ প্রদান করলে গবেষণা ক্ষেত্রে চরম বিপর্যয় নেমে আসবে বলে মনে করছেন কৃষি বিজ্ঞানের সাথে সংশ্লিষ্টরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্প্রসারণ-১ শাখা হতে গত ৩০ সেপ্টেম্বর একটি প্রজ্ঞাপন জারী হয়। প্রজ্ঞাপনে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তিন কর্মকর্তাকে উপপরিচালক হিসেবে পদোন্নতি দিয়ে প্রেষণে প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে বারটান-এ পদায়ন করা হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় খামারবাড়ি, ঢাকায় অতিরিক্ত উপপরিচালক হিসেবে এই তিন কর্মকর্তার মধ্যে সোহেলী পারভীন সরেজমিন উইং, নিলুফার ইয়াসমিন ক্রপস উইং এবং তাহমিনা খাতুন উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইং-এ কর্মরত ছিলেন।
ঢাকাস্থ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে জানা যায়, কৃষি গবেষণা তিষ্ঠানগুলো থেকে উদ্ভাবিত জাত ও প্রযুক্তি সারাদেশে কৃষক পর্যায়ে সম্প্রসারণ ও অভিযোজন করাই মূলত তাদের কাজ। কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা (বিসিএস কৃষি) হিসেবে কর্ম জীবন শুরু করা এ তিন কর্মকর্তা মূলত কৃষক পর্যায়ে বিভিন্ন ফসলের জাত সম্প্রসারণ, অভিযোজন ও সঠিক চাষাবাদ পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান বিতরণের
সাথে জড়িত। গবেষণাধর্মী কোন প্রতিষ্ঠানে গবেষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন না।
অপরদিকে বারটান-এর অন্যতম কাজ হলো জনগণের পুষ্টিস্তর উন্নয়নের লক্ষ্যে অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ফসলের জাত উদ্ভাবন, ফসলের সংগ্রহপূর্ব ও সংগ্রহোত্তর ক্ষয় ক্ষতি হ্রাস, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণ বিষয়ে গবেষণা, খাদ্য শস্যের পুষ্টিমান নিরুপন, স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্য ও ঔষধি গাছ নিয়ে গবেষণা পরিচালনা
করা। তাই প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারমত পদটিতে সঠিকভাবে দায়িত্বপালন
করতে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে কোন গবেষণা প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘসময় কাজের অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন বলে মনে করছেন বারটান-এর বিজ্ঞানীরা।
এছাড়া বারটান প্রবিধানমালা-২০১৬ এর অনুচ্ছেদ ৮ অনুযায়ী অত্র প্রতিষ্ঠানে প্রেষণে পদায়নের কোন সুযোগ নেই। প্রবিধানমালা-২০১৬ এর তফসিল প্রবিধান ২(৮) অনুযায়ী প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগের ক্ষেত্রে পদোন্নতির মাধ্যমে, তবে পদোন্নতিযোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে প্রয়োজনীয় যোগ্যতা সাপেক্ষে
সরাসরি নিয়োগের বিধান রয়েছে।
এ বিষয়ে বারটান-এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও বারটান বিজ্ঞানী সমিতির সভাপতি জ্যোতি লাল বড়ুয়া বলেন, ‘কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তিন কর্মকর্তাকে প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পদে পদায়নে আমরা গভীর ভাবে উদ্বিগ্ন, বিষ্মিত ও হতাশ।