অনন্তের যাত্রায় সুপ্রিমকোর্টে ব্যারিস্টার রফিক-উল হক

দেশের প্রবীণ আইনজীবী ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের জানাজা তার দীর্ঘ সময়ের কর্মক্ষেত্র সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সুপ্রিমকোর্ট জামে মসজিদের খতিব জানাজায় ইমামতি করেন। জানাজা শেষে তার মরদেহ দাফনে বনানী কবরস্থানে নেয়া হয়।

আজ দুপুর দুইটায় সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে রফিক-উল হকের তৃতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় আদ-দ্বীনে সকাল সাড়ে দশটায়। এরপর নিজ বাসা পল্টনে নেয়া হয় রফিক-উল হকের মরদেহ। বাদ জোহর বায়তুল মোকাররমে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

শনিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে আটটার দিকে ব্যারিস্টার রফিক-উল হক মারা গেছেন (ইন্নালিল্লাহি …রাজিউন)। রাজধানীর মগবাজারের আদ-দ্বীন হাসপাতালের ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।

জানাজায় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতিগণ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ. ম রেজাউল করিম এমপি, রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন এমপি, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক আইনমন্ত্রী আবদুল মতিন খসরু এমপি, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নুর তাপস, এটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন, সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ, এটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের কর্মকর্তাগণ, সিনিয়র আইনজীবী, সুপ্রিমকোর্ট বার কার্যনির্বাহী কমিটির কর্মকর্তাগণ, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের ব্যক্তিবর্গসহ বিপুলসংখ্যক আইনজীবী, স্বজন শুভাকাঙ্খী জানাজায় অংশ নেন।

ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ১৯৩৫ সালের ২ নভেম্বর কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মুমিন-উল হক পেশায় ছিলেন চিকিৎসক। আর মা নূরজাহান বেগম ছিলেন গৃহিণী। কলকাতার সুবর্ণপুরেই রফিক-উল হকের শৈশব ও কৈশোর কাটে।

১৯৫১ সালে তিনি ম্যাট্রিকুলেশন পাস করেন। এরপর ১৯৫৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও ১৯৫৭ সালে দর্শনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এই সময়ে তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদে পর পর দু’বার সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৮ সালে এলএলবি পাস করে পরবর্তীকালে আইনজীবী হিসেবে কলকাতা হাইকোর্টে পেশাজীবন শুরু করেন।

১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে বার-এট-ল করে চলে আসেন ঢাকায়। ১৯৬৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং ১৯৭৩ সালে আপিল বিভাগে সিনিয়র আইনজীবী হন রফিক-উল হক। তার একমাত্র ছেলে ফাহিমুল হক একজন ব্যারিস্টার। এর আগে ২০১১ সালে রফিক-উল হকের চিকিৎসক স্ত্রী ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।