সমাজের দর্পণের সাথে সম্পৃক্তরা (সাংবাদিকরা) যেন দেশপ্রেমীক হয়ে মানুষের কল্যাণে কাজ করে এমন আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির রজতজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সংবাদপত্র সমাজের দর্পণ। তাই এর সঙ্গে যারা যুক্ত তারা যেন দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হন। তাদের ভেতরে যেন মানবতা বোধ থাকে। তারা যেন মানুষের কল্যাণে কাজ করেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমরা জাতীয় অনলাইন গণমাধ্যম নীতিমালা ২০১৭, জাতীয় সম্প্রচার নীতিমালা ২০১৪ প্রণয়ন করেছি। গণমাধ্যম কর্মীদের চাকরির সুরক্ষায় ‘গণমাধ্যম কর্মী চাকরি শর্তাবলী আইন ’ প্রণয়ন করেছি। এটা আগে ছিলো না। এ ছাড়া সম্প্রচার খাতে উন্নয়নে স্বাধীন সম্প্রচার কমিশন গঠন করা হয়েছে। সম্প্রচার আইনও করা হচ্ছে। যাতে করে বাস্তবমুখি কাজ হয়। মানুষকে বিভ্রান্ত করা সেই হলুদ সাংবাদিকতা যাতে না থাকে।’
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘দেশে একটা সময় ছিল যতই দুর্নীতি বা অন্যায় হোক সেগুলো ধামাচাপা দেওয়া হতো। সমস্যাগুলো কার্পেটের নিচে লুকিয়ে রাখা হতো। আমরা তা করছি না। কোথাও কোনো অন্যায় হলে আমরা দলের চিন্তা করি না। আমরা চিন্তা করি যেখানে অন্যায় হবে সেখানে ব্যবস্থা নিতে হবে।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে চিন্তা, বিবেক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে। সেগুলো ভোগ করতে গেলে অপরের প্রতি, রাষ্ট্রের প্রতি দায়িত্ববোধ থাকতে হবে। সমালোচনা সবাই করুক তাতে আপত্তি নেই। এর মাধ্যমে অনেককিছু জানা যায়।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সে হিসেবে আমিও সাংবাদিক পরিবারের সদস্য। আমি সেভাবেই আমি আপনাদের দেখি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আইন ২০১৪ প্রণয়ন করেছি। ৫ হাজার ২৬৩ জন সাংবাদিককে ১৭ কোটি টাকার বেশি সেই কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে অনুদান দেওয়া হয়েছে। কর্মহীন সাংবাদিকদের ৩ কোটি ৫০ লাখ টাকা প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে অনুদান দেওয়া হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশে একটি মাত্র টিভি, রেডিও ছিল। আওয়ামী লীগ সরকার এসে তা বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করে দেয়। ১৯৯৬ সালের আগে কয়টি পত্রিকা ছিলো? এ সরকার ব্যাপকভাবে পত্রিকা উন্মুক্ত করে দিয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য ছিলো ব্যাপকভাবে কর্মসংস্থান করা।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশ ডিজিটাল করতে গিয়ে অনেক সমালোচনা পেয়েছি। কিন্তু ডিজিটাল করার ফলেই করোনার মধ্যে এখন অনলাইনে সবার সামনে কথা বলছি। ডিজিটাল ব্যবস্থার কারণেই সবাই এ কার্যক্রমকে অব্যাহতক রাখছে।’
ভিডিও কনফারেন্সে তিনি বলেন, ‘আমরা যেখানেই দুর্নীতি পাচ্ছি সে দলের হোক আর যেই হোক আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। এতে আমাদের বিরোধী যারা তাদের লেখার সুযোগ হচ্ছে আওয়ামী লীগ দুর্নীতি করছে।এই কথা কেউ চিন্তা করছে না আওয়ামী লীগ দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দিচ্ছে না।’
অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আপনারা যে যেভাবে রিপোর্ট করেন আমরা বাধা দিইনি। ঠিক স্বাধীনতার পর জাতির পিতাও সেই সুযোগটা দিয়েছিলেন। কারণ তিনিও সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।’