৫৭০ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) আরবের মক্কায় জন্মগ্রহণ করেন। মুসলমানদের কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে প্রিয় মানুষ মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স)। বিশ্বের সর্বকালের সেরা মহামানব হিসেবে মুসলিম সম্প্রদায়ের কাছে প্রশ্নাতীতভাবে স্বীকৃত। এবার ইন্টারনেট জায়ান্ট ‘গুগল’ ডটকমের র্যাংকিংয়েও বিশ্বসেরা মানুষ হিসেবে তালিকায় প্রথম স্থানে তারই নাম রয়েছে।
গুগলে best man, best human, best human in the world, ‘who is the best man in the world- ইত্যাদি লিখে সার্চ করলে প্রথমেই চলে আসে হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এর নাম।
মাইকেল হার্টসের লেখা ‘বিশ্ব সেরা ১০০ মনীষী’ গ্রন্থে প্রথম স্থানেই রয়েছে হযরত মুহাম্মদ (স)-এর নাম। ১৯৭৮ সালে প্রকাশিত ওই বইটি বিভিন্ন মহলে ব্যাপক হইচই ফেলে দেয়।
গুগলের এ তথ্য এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ‘Best Man In The World ’Prophet Muhammad’. অর্থাৎ ‘নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, বিশ্বের সেরা মহামানব’ ইত্যাদি হ্যাশট্যাগে ভাইরাল হয়েছে।
এক নজরে হযরত মুহাম্মদ (স)
হযরত মুহাম্মাদ (সা.) ছিলেন সর্বশেষ নবী। তিনি পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী রাজনৈতিক, সামাজিক ও ধর্মীয় নেতা। তার এই বিশেষত্বের অন্যতম কারণ হচ্ছে আধ্যাত্মিক ও জাগতিক উভয় জগতেই চূড়ান্ত সফলতা অর্জন। তিনি ধর্মীয় জীবনে যেমন সফল তেমনই রাজনৈতিক জীবনেও। সমগ্র আরব বিশ্বের জাগরণের পথিকৃৎ হিসেবে তিনি অগ্রগণ্য; বিবাদমান আরব জনতাকে একীভূতকরণ তার জীবনের অন্যতম সফলতা।
৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) আরবের মক্কায় মা আমিনার কোল আলো করে জন্মগ্রহণ করেন। ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে মাত্র ৬৩ বছর বয়সে তিনি ইন্তেকাল করেন।
একটা সময় আরবজাহান ছিল ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত। তারা আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ে। সর্বত্র দেখা দিয়েছিল অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা।
মারামারি আর হানাহানিতে লিপ্ত ছিল মানুষ। মূর্তিপূজা করত। এ যুগকে বলা হয় ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’। এ থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে, তাদের আলোর পথ দেখাতে আল্লাহতায়ালা মুহাম্মদ (সা.)-কে এ পৃথিবীতে পাঠান।
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত আছে, ‘মহানবীকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবী সৃষ্টি করতেন না।’
নারীদের মর্যাদাবানে বিশ্বনবী
ইসলামের আগে জাহেলি আরব সমাজে নারীর মর্যাদাপূর্ণ কোনো অবস্থান ছিল না। তাদের গণ্য করা হতো ভোগের বস্তু হিসেবে। নারী ছিল রাতের কবিতার আসর আর মদের আড্ডার বিশেষ অনুষঙ্গ। জীবন ও সমাজে তাদের বড় জোর স্বামী বা মনিবের মরোঞ্জনের উপকরণের বেশি কিছু মনে করা হতো না। নারীকে পরিবার, সমাজ ও বংশের জন্য অসম্মান ও অভিশাপ মনে করা হতো। এমনকি সামাজিক লজ্জার ভয়ে নারীকে জীবন্ত কবর দেয়া হতো।
পবিত্র কোরআনে পুরুষদের সঙ্গে নারীদেরও সম্পত্তির উত্তরাধিকার নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। একইভাবে মায়েদের, স্ত্রীদের, কন্যাদের, স্বামীদের সম্পত্তির এবং বিশেষ অবস্থায় বোনদের-ভাইদের সম্পত্তির উত্তরাধিকার সাব্যস্ত করা হয়েছে। একবার ওয়াইস করনি (রা.) নবীজির কাছে খবর পাঠালেন, হে আল্লাহর রাসূল (সা.)। আপনার সঙ্গে আমার দেখা করার খুব ইচ্ছা, কিন্তু আমার মা খুব অসুস্থ, এখন আমি কী করতে পারি?
নবীজি (সা.) উত্তর পাঠালেন, আমার কাছে আসতে হবে না। আমার সঙ্গে সাক্ষাতের চেয়ে তোমার মায়ের সেবা করা বেশি জরুরি। মায়ের সেবা করার কারণে তিনি প্রিয় নবীর যুগে থেকেও তার সাক্ষাৎ লাভ করতে পারেননি।
রাসূল (সা.) বলেন- যে ব্যক্তির তিনটি কন্যাসন্তান আছে যাদের সে লালন পালন করে এবং তাদের সঙ্গে সদয় আচরণ করে, তার জন্য অবশ্যই জান্নাত ওয়াজিব। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল! যদি দুটি মেয়ে থাকে? নবীজি বললেন, দুটি থাকলেও (বুখারি : ২৪৮১)।