জন্মদিনে ফিলিস্তিনি শিশুকে হত্যা করল বর্বর ইসরাইল সেনারা

ফিলিস্তিনি মুসলমানদের উপর হাজার বছর ধরে দখলদার ইসরাইলি বাহিনী নির্যাতন চালিয়ে আসছে। দিন যতই যাচ্ছে তাতই মুসলমানদের উপর তাদের অত্যাচারের সীমা ভয়াবহ হয়ে উঠছে। দখলদারদের অবৈধ উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদের ফিলিস্তিনি মুসলমানদের শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদে গত শুক্রবার বেপরোয়া ছিলো তারা।

এ সময় নির্বিচারে ইসরাইলি দখলদারদের গুলিতে অসংখ্য মুসলিমসহ ১৩ বছরের এক শিশুকে হত্যা করে তারা।

ইসরাইল-ফিলিস্তিনিদের এ সংঘাত দেখতে গিয়ে ছিল পশ্চিমতীরের মৃত আলি আয়মান নাসর আবু আলিয়া। এদিন ছিল তার জন্মদিন। খবর আরব নিউজ ও ডয়েচে ভেলের।

পাড়ার মোড়ে ইসরাইলের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে ফিলিস্তিনের বিক্ষোভকারীদের সংঘাত দেখতে যোগ দিয়েছিল সেই বিক্ষোভে। সেখানেই ইসরাইলি সেনারা ঠাণ্ডা মাথায় তাকে গুলি করে। এই নিয়ে গত এক বছরে পাঁচজন শিশুকে গুলি করে মারল ইসরাইল।

শনিবার জানাজার আগে ফিলিস্তিনি ওই শিশুর মরদেহ নিয়ে উত্তর রামাল্লায় হাজার হাজার মানুষ ইসরাইলের ওই বর্বরতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করে। তারা নির্বিচারে গুলি করে শিশু হত্যার ঘটনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নির্লিপ্ততার নিন্দা জানান।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, পশ্চিমতীরের রামাল্লা এলাকার মুঘাইর গ্রামে ফিলিস্তিনি শিশুটির পেটে একাধিক গুলি করেন ইসরাইলি সেনারা।

আলির মৃত্যুর পর স্থানীয় মানুষেরা জানিয়েছেন, প্রায় প্রতি সপ্তাহেই ওই এলাকায় ইসরাইলি নিরাপত্তরক্ষীদের সঙ্গে এলাকার মানুষের সংঘাত হয়। তবে তাদের দাবি, শুক্রবারের বিক্ষোভ ছিল শান্তিপূর্ণ।

আলি আবু আলিয়ার পরিবার ধার্মিক। কোনো বছরই ছেলের জন্মদিন পালন করেননি তার বাবা-মা। কিন্তু এ বছর তার বাবা-মা ঠিক করেছিলেন ছেলের জন্মদিন পালন করবেন। মা কেকও বানিয়েছিলেন।

গত শুক্রবার বাড়িতে যখন জন্মদিনের প্রস্তুতি চলছে, তখনই পাড়ার মোড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই এমন বিক্ষোভ চলে। এদিন বিক্ষোভ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর আলি তা দেখতে যায়। তার কিছুক্ষণের মধ্যেই নিরাপত্তারক্ষীরা বিক্ষোভকারীদের দিকে গুলি চালাতে শুরু করে। আলি তলপেটে গুলি লাগে।

বিক্ষোভকারীরাই আলিকে নিয়ে যান স্থানীয় হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আলির মৃত্যু হয়। শোকের ছায়া নেমে আসে গোটা এলাকায়। আলির মা খবর পেয়ে অচেতন হয়ে পড়েন। আলির বাবা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, এর পর তাদের জীবনের আর কোনো মানে থাকল না।

ফিলিস্তিনে দীর্ঘদিন ধরে শিশু-কিশোরদের অধিকার নিয়ে কাজ করছে ডিফেন্স ফর চিলড্রেনস ইনট্যারন্যাশনাল প্যালেস্টাইন। তাদের বক্তব্য, গত এক বছরে এই নিয়ে পাঁচজন শিশুকে গুলি করে হত্যা করেছে ইসরাইলের নিরাপত্তারক্ষীরা। তার আগের বছরে সংখ্যা ছিল আরও বেশি।

১৯৬৭ সাল থেকে পশ্চিমতীরে এ ধরনের মানবতাবিরোধী অপরাধ চালিয়ে আসছেন বর্বর ইসরাইলি সেনারা।