ব্রিটেনে করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের সংক্রমণ দেখা দেয়ায় সেখান থেকে বাংলাদেশে আসা যাত্রীদের সাত দিন বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক।
তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি যুক্তরাজ্যে কোভিড-১৯-এর নতুন ধরন দেখা দেয়ায় সেখান থেকে ফেরত যাত্রীদের দেশে প্রবেশে সাত দিন বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। সাত দিন শেষ হলে কোয়ারেন্টাইনে থেকেই সরকারিভাবে যাত্রীদের কোভিড টেস্ট করে ছেড়ে দেয়া হবে। দেশের কোভিড পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতেই এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।’
বুধবার রাজধানীর আশকোনা হজ ক্যাম্পে বিদেশফেরত যাত্রীদের নমুনা পরীক্ষার জন্য জিন এক্সপার্ট মেশিন, মোবাইল পিসিআর ল্যাব ও অ্যান্টিজেন টেস্ট কেন্দ্রের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
করোনাভাইরাসের নতুন ধরন সম্পর্কে গত সপ্তাহে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে তথ্য দেয় যুক্তরাজ্য সরকার। গত শনিবার দেশটির কর্তৃপক্ষ জানায়, করোনার আগের ধরনের তুলনায় নতুন ধরনের সংক্রমণ ক্ষমতা ৭০ শতাংশ বেশি। এ কারণে সংক্রমণ পরিস্থিতি চিন্তিত করে তুলেছে যুক্তরাজ্য সরকারকে।
জাহিদ মালেক বলেন, ‘জিন এক্সপার্ট মেশিনে কোভিড-১৯ টেস্টের মাধ্যমে দেশে নতুন আরেকটি প্রযুক্তি যুক্ত হলো। এর আগে এ বছর মার্চ মাস থেকেই দেশে কোভিড-১৯ টেস্ট শুরু করা হয়। শুরুতে মাত্র একটি পিসিআর ল্যাব ছিল। বর্তমানে ১১৮ পিসিআর ল্যাব চালু করা হয়েছে। এর সাথে অ্যান্টিজেন টেস্ট যুক্ত করা হয়েছে। আজ নতুনভাবে জিন এক্সপার্ট মেশিনের মাধ্যমে কোভিড-১৯ পরীক্ষা শুরু হলো। সুতরাং কোভিড মোকাবিলায় আমরা সব দিক দিয়েই এখন সেবার মান বৃদ্ধি করেছি।’
কোভিড মোকাবিলায় স্বাস্থ্য খাতের যথোপযুক্ত উদ্যোগ থাকায় দেশের মানুষ স্বাভাবিক জীবন-যাপন করছে, ব্যবসা-বাণিজ্য চলমান রয়েছে এবং দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিও ঊর্ধ্বমুখী আছে বলে দাবি করেন মন্ত্রী।
মোবাইল পিসিআর ল্যাব প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানান, এটি এশিয়ার সর্ব প্রথম বায়োসেফটি লেভেল-২ সমৃদ্ধ ও আন্তর্জাতিক মানের মোবাইল ল্যাব। যেখানে রোগীরা নিজের অবস্থানে থেকেই নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দে করোনা পরীক্ষা ও অন লাইনে রিপোর্ট পাবেন। এছাড়াও উন্নত বিশ্বের ন্যায় জরুরি প্রয়োজনে নির্দিষ্ট স্থানে উপস্থিত হয়ে বা দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও শিল্পাঞ্চলে গিয়ে নমুনা নেয়া এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে যথাসময়ে অনলাইনে রিপোর্ট প্রদানের সুবিধা থাকছে এ ল্যাবে।
উল্লেখ্য, জাতীয় যক্ষা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধায়নে ও গ্লোবাল ফান্ডের আর্থিক সহযোগীতায় জিন এক্সপার্টের মাধ্যমে দেশে কোভিড-১৯ টেস্ট শুরু হয়েছে। এ টেস্ট পরিচালনা করার জন্য তিনটি পৃথক কক্ষের প্রয়োজন হয় না। এ পদ্ধতিতে পিসিআর রি-এজেন্ট কার্টিজে আগে থেকেই দেয়া থাকে। তাই নিউক্লিক এসিড এক্সট্রাকশন, অ্যামপ্লিফিকেশন ও ডিটেকশন প্রক্রিয়া কার্টিজের মধ্যে সম্পূর্ণ হয়।