রক্তার্জিত স্বাধীনতা পূর্ণতা পায় ১০ জানুয়ারি: তথ্যমন্ত্রীতথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়েই পূর্ণতা পায় আমাদের রক্তার্জিত স্বাধীনতা।’
শনিবার দুপুরে রাজধানীর তোপখানা রোডে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আওয়ামী হকার্স লীগ আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি একথা বলেন।
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস স্মরণে মন্ত্রী ড. হাছান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর বাংলাদেশ বিজয় অর্জন করে। সেই প্রচন্ড উচ্ছ্বাসের মধ্যেও বাঙালির মনের গভীরে একটি কালো দাগ ছিলো- বঙ্গবন্ধু কখন আসবেন। আমাদের রক্তার্জিত স্বাধীনতা সেদিনই পূর্ণতা পেয়েছিলো, যেদিন জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ১০ই জানুয়ারি বাংলাদেশে পদার্পণ করেন।’
‘বঙ্গবন্ধু মুজিব হাজার বছরের ঘুমন্ত বাঙালিকে শ্লোগান শিখিয়েছিলেন- বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো, তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা মেঘনা যমুনা’ ; আর সেই শ্লোগানে উদ্দীপ্ত লাখ লাখ বাঙালি বুকের তাজা রক্ত ঢেলে সেই রক্তিম স্বাধীনতা ছিনিয়ে এনেছিলো’ বলেন হাছান মাহমুদ।
তথ্যমন্ত্রী হাছান বলেন, ‘১০ জানুয়ারি দেশের মাটিতে পদার্পণ করে বঙ্গবন্ধু পরিবারের কাছে যাননি, বিমানবন্দর থেকে ছুটে গেছেন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আনন্দাশ্রুসজল নয়নে জাতির পিতাকে এক পলক দেখার জন্য উন্মুখ লাখ লাখ মানুষের কাছে। সেই আনন্দে বিহবল জনতার সমুদ্রকে তিনি বলেছিলেন- দেশের মানুষেরা দেশকে স্বাধীন করেছে, তাকে মুক্ত করে এনেছে, তাদের রক্তের ঋণ তিনি বুকের রক্ত দিয়ে শোধ করতে প্রস্তুত। সেদিন আমরা কেউ ভাবিনি পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট তাকে ঘাতকের হাতে প্রাণ দিতে হবে।’
দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির যে ৭.৪ শতাংশের রেকর্ড বঙ্গবন্ধু করে গিয়েছিলেন, চল্লিশ বছর পরে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা তা অতিক্রম করতে পেরেছি, বলেন তথ্যমন্ত্রী।
এসময় আওয়ামী লীগ সরকারের নেতৃত্বে দেশ পরিচালনার যুগপূর্তিতে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের বিষয়ে বিএনপিনেতা রিজভী আহমেদের মন্তব্যের জবাবে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘অন্ধ ও বধিরের মতো সমালোচনা না করে বিএনপিকে অনুরোধ করবো আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও জাতিসংঘের পরিসংখ্যানগুলোতে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতির চিত্রের দিকে তাকাতে।’
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ এমপি অনলাইনে এবং ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবু আহমেদ মান্নাফী বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে সভায় বক্তব্য রাখেন। হকার্স লীগের সাবেক সভাপতি এস এম জাকারিয়া হানিফের সভাপতিত্বে সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মো: জাহেদ আলীর সঞ্চালনায় সভাটি সঞ্চালনা করেন।
— — — —
সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের ব্যাপকতা বৃদ্ধি জঙ্গিবাদ-মৌলবাদকে রুখতে সহায়ক হবে – তথ্যমন্ত্রী
এদিন সন্ধ্যায় রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির চিত্রশালা মিলনায়তনে ডিরেক্টরস গিল্ডের দ্বিবার্ষিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ জঙ্গিবাদ-মৌলবাদ রুখতে দেশব্যাপী সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের ব্যাপকতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার দেশের উন্নয়নের পাশাপাশি জনগণের আত্মিক উন্নয়ন ঘটাতে চায়, কারণ উন্নত জাতি গঠনে এর বিকল্প নেই।
মন্ত্রী এসময় নাটক, চলচ্চিত্রসহ সাংস্কৃতিক সকল অঙ্গনে দেশের কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে লালনে যত্নবান থাকতে সৃষ্টিশীলদের প্রতি আহবান জানান।
ডিরেক্টরস গিল্ডের সভাপতি সালাহউদ্দীন লাভলু’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এস এ হক অলীকের সঞ্চালনায় সভায় নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, ম. হামিদ, অভিনয় শিল্পী সংঘের সভাপতি শহীদুজ্জামান সেলিম, চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির সভাপতি খোরশেদ আলম খসরু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।