তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে বিএনপি’র বক্তব্য ‘নাচতে না জানলে উঠান বাঁকা’র মতো। মন্ত্রী আজ দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে শেখ রাসেল শিশু-কিশোর পরিষদের আলোচনা ও ল্যাপটপ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সমসাময়িক প্রসঙ্গে একথা বলেন। শেখ রাসেল শিশু-কিশোর পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান মোঃ রকিবুর রহমানের সভাপতিত্বে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, “বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব ও তাদের কয়েকজন নেতা বলেছেন, সামনে ১৬ জানুয়ারি যে পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, সেটিও সুষ্ঠু হবে না। প্রকৃতপক্ষে, প্রথম দফা নির্বাচনে তারা মাত্র দু’টি পৌরসভায় জয় পাওয়ায় লজ্জা ঢাকার জন্য প্রেসক্লাবের সামনে দাঁড়িয়ে একথা বলা ছাড়া তাদের কোনো বক্তব্য নেই। যখন কেউ নাচতে না জানে তখন বলে যে, উঠান বাঁকা। বিএনপি’র বক্তব্য হচ্ছে ঠিক সেরকম।” দেশে অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং সামনের ধাপগুলোও সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হবে উল্লেখ করে ড. হাছান বলেন, ‘বিএনপিকে তাই অনুরোধ জানাবো পৌরসভা ও জেলা-উপজেলায় নিজেদের যে অনৈক্য, সেটির নিরসন করুন। নিজেদের দুর্বলতা ঢাকার জন্য প্রেসক্লাবের সামনে অসত্য ভাষণ দিয়ে কোনো লাভ হবে না।’
বাংলাদেশ যথাসময়ে করোনার টিকা পাচ্ছে না বলে গুজব রটানোর চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর আবার করোনা ভ্যাকসিন অ্যাপসের খরচ নিয়ে কিছু গণমাধ্যমে ভুল সংবাদ পরিবেশন হয়েছে এবং আইসিটি বিভাগ ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে বিবৃতি দিয়ে পরিস্কার বলা হয়েছে অ্যাপসের জন্য কোনো খরচ নেই, জানান তথ্যমন্ত্রী। আবার ভারত থেকে না কি ৪৭ভাগ বেশি দামে আমরা ভ্যাকসিন কিনছি-এ রিপোর্টও সত্য নয়, এটিও মিথ্যা। চুক্তি অনুযায়ী ভারত যে দামে ভ্যাকসিন পাবে, আমরাও একই দামে ভ্যাকসিন পাবো, জানান তিনি। এপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, দায়িত্বশীল কোনো গণমাধ্যম যদি ভুল বা অসত্য সংবাদ পরিবেশন করে, তাহলে সেই তাদের দায়িত্বশীলতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা খর্ব হয়। তাই আমি সব গণমাধ্যমের প্রতি অনুরোধ জানাবো, ভালভাবে খোঁজখবর না নিয়ে এই ধরণের কোনো সংবাদ যেন পরিবেশিত না হয়।
বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের ওপর আলোকপাত করে ড. হাছান বলেন, ‘১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর আমরা বিজয় অর্জন করেছিলাম। কিন্তু ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু ফিরে না আসা পর্যন্ত আমাদের স্বাধীনতা পূর্ণতা পায়নি। বঙ্গবন্ধু যদি ফিরে আসতে না পারতেন, তাহলে আমাদের স্বাধীনতা কতটুকু টেকসই হতো সেটি নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন থেকে যায়। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনেই আমাদের স্বাধীনতা-সাবভৌমত্ব সংহত হয়।’
শিশু-কিশোরদের উদ্দেশ্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আজকের পৃথিবীতে মেধা, মমতা, মূল্যবোধ, দেশাত্মবোধ এবং যুক্তি নির্ভরতা-এই পাঁচটি বিষয়ের সমন্বয় ঘটিয়ে নতুন প্রজন্ম তৈরি করতে পারলেই আমরা দেশকে স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাতে পারবো এবং সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ টেকসই হবে। আর স্বপ্নটা শুধু নিজের জন্য নয়, সমাজ ও দেশের জন্যও দেখতে হবে।’
প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই আমাদের সকল উন্নয়নের প্রেরণা যা তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাস্তবায়ন করছেন। সকল বয়সের নাগরিকের দায়িত্ব দেশ ও জাতির এই অগ্রযাত্রায় সর্বান্তকরণে অংশ নেয়া।’
অন্যান্যের মধ্যে শিশু-কিশোর সংগঠক ক্যাপ্টেন মোয়াজ্জেম হোসেন, কে, এম, শহিদ উল্যা, আসাদুল হক প্রমুখ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।