আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ কৃষক লীগের ৪৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। ১৯৭২ সালের ১৯ এপ্রিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে সংগঠনটি গঠন করেছিলেন। করোনা মহামারীর কারণে এবার স্বাস্থ্যবিধি মেনে মানবিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করবে সংগঠনটি। আজ সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন। এ সময়ে ধানমন্ডি ৩২ সংলগ্ন স্থানে মাস্ক বিতরণ। সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধু স্মৃতি বিজড়িত ধানমন্ডি-৩২ এ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন ও মোনাজাত। কেন্দ্রীয়ভাবে পোস্টার ও ফেস্টুন স্থাপন। এ ছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগসহ সকল সহযোগী ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠন এবং ইলেকট্রনিক, প্রিন্ট ও অনলাইন সাংবাদিক বন্ধুদের মাঝে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভেচ্ছা উপহার (মাস্ক) প্রদান। কেন্দ্রের নির্দেশনা অনুযায়ী সারাদেশের জেলা উপজেলায় এই কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি কৃষকদের মাঝেমধ্যে কৃষিপণ্য বিতরণ করা হবে। সংগঠনের নেতৃবৃন্দ জানান, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ২৫ হাজার মাস্ক বিতরণ করা হবে। সংগঠনটির সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপি নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।
কৃষিবিদ সমীর চন্দ বলেন, করোনাকালে প্রায় ২ লাখ কৃষক ও কৃষকের পরিবারের মাঝে খাদ্য ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ করেছেন সংগঠনটি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় ১০টি হটলাইন চালু করে প্রায় চার লাখ শতক কৃষিজমির ধান কেটে মাড়াই ঝাড়াই করে কৃষকের গোলায় তুলে দেয় কৃষক লীগ। বোরো ও আমন মৌসুমে বন্যা, জলোচ্ছ্বাস,
ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মধ্যে বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় বিনামূল্যে ধান-সবজি বীজ ও সার বিতরণ করা হয়। কৃষকের অভয়ারণ্য গ্রাম, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে কৃষকদের নিয়ে বাংলাদেশ কৃষক লীগের কমিটি গঠন। এই পর্যন্ত গ্রাম ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন সম্পন্ন করে কাউন্সিল করে প্রায় ১০৮১ টি ইউনিয়ন কৃষক লীগ কমিটি গঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চলমান মাদক, দুর্নীতি ও মজুদদারির বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছেন।
সমীর চন্দ জানান, কৃষক লীগের বর্তমান কমিটি দায়িত্ব নেওয়ার পর গত দুই বছর কৃষক হত্যা দিবসে শহীদ কৃষকদের কবরস্থানগুলো পাকা ও সৌন্দর্যবর্ধন, শহীদ কৃষক পরিবারকে আর্থিক সহযোগিতাসহ আলোচনাসভা ও দোয়া মাহফিল করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ১০টি হটলাইন চালু করে প্রায় চার লাখ শতক কৃষিজমির ধান কেটে মাড়াই-ঝাড়াই করে কৃষকের গোলায় তুলে দেয় বাংলাদেশ কৃষক লীগ। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলা উপজেলায় বিনামূল্যে ধান-সবজি ও সার বিতরণ করে। স্বেচ্ছায় প্লাজমা-রক্তদান ও এতিমদের মাঝে মানবিক উপহার প্রদান এবং দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে মাসব্যাপী জাতীয় শোক দিবস শোকাবহ আগস্ট পালন করে বাংলাদেশ কৃষক লীগ। তিনি বলেন, কৃষক লীগের দাবির প্রেক্ষিতে ধান কেনা কমিটিতে জেলা উপজেলা পর্যায়ে একজন কৃষক লীগ নেতাকে অন্তর্ভুক্তি করে সরকার। এজন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার পাশাপাশি খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদারকেও আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
প্রতিষ্ঠার পরে বঙ্গবন্ধু কৃষক নেতা শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতকে কৃষক লীগের কমিটি গঠনের দায়িত্ব দেন। বঙ্গবন্ধুর দিকনির্দেশনায় ব্যারিস্টার বাদল রশিদকে সভাপতি ও আবদুর রউফকে সাধারণ সম্পাদক করে গঠিত হয়। এর পর থেকে সংগঠনটি কৃষি ও কৃষকের কল্যাণে কাজ করে আসছে। ১৯৮১ সালের শেখ হাসিনা স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর কৃষি ও কৃষকের কল্যাণে আবারও কৃষক লীগকে পুনর্গঠন করেন। ২০১৯ সালের ৬ নভেম্বর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কৃষক লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলে কৃষিবিদ সমীর চন্দকে সভাপতি ও অ্যাডভোকেট উম্মে কুলসুম স্মৃতি এমপিকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়।