প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতে আরও ৪ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে আরও আড়াই লাখের বেশি মানুষ। গতকাল রেকর্ড সংখ্যক মানুষের করোনা পরীক্ষা করেছে ভারত।
দেশটির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ২ লাখ ৫৭ হাজার। একই সময়ে মারা গেছে ৪ হাজার ১৯৪ জন। অপরদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ২০ লাখ ৬৬ হাজার ২৮৫ জনের দেহে করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে।
শনিবার সকাল পর্যন্ত ভারতে আক্রান্তের সংখ্যা ২ কোটি ৬২ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে দেশটিতে তিন লাখের বেশি সংক্রমণের পর চলতি সপ্তাহের শুরুতে সংক্রমণ কিছুটা কমতে দেখা গেছে। গত ১৫ মে’র পর থেকে গত কয়েকদিনে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে মারা গেছে।
তবে একদিন আগের তুলনায় আক্রান্ত এবং মৃত্যুর সংখ্যা কিছুটা কমেছে। একদিন আগে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ২ লাখ ৫৯ হাজার ৯৯১ এবং মারা গেছে ৪ হাজার ২০৯ জন।
ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসতেই বদলেছে পরিস্থিতি। দিল্লি, বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান, গুজরাট, মধ্যপ্রদেশে সংক্রমণ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। এসব রাজ্যে শুরু থেকেই সংক্রমণ বেশি ছিল। এমনকি মোট সংক্রমণের অধিকাংশই এসব রাজ্যে।
তবে কর্নাটকের পরিস্থিতি এখনও লাগামছাড়া। এছাড়া গত কয়েকদিনে ভারতের মেঘালয়, ত্রিপুরা, মণিপুর, নাগাল্যান্ড, সিকিম, মিজোরামের মতো রাজ্যেও সংক্রমণ বেড়েছে।
সংক্রমণের গতি রোধ করতে কর্নাটক এবং কেরালায় লকডাউন আরও বাড়ানো হয়েছে। কর্নাটকে লকডাউন আরও দুই সপ্তাহ বাড়ানো হয়েছে। আগামী ৭ জুন পর্যন্ত সেখানে লকডাউন কার্যকর থাকবে। এদিকে কেরালায় আগামী ৩০ মে পর্যন্ত লকডাউন বাড়ানো হয়েছে।
শুক্রবার ভারত সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এখন পর্যন্ত ১৯ কোটি ৩২ লাখের বেশি মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে এখন পর্যন্ত মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৎ২ কোটি ৬২ লাখ ৮৯ হাজার ২৯০। অপরদিকে এখন পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫২৫ জনের।
দৈনিক সংক্রমণের চেয়ে বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে ওঠায় কমছে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা। গত দু’সপ্তাহে সক্রিয় রোগী সংখ্যা কমে হয়েছে ২৯ লাখ ২৩ হাজার ৪শ। দেশে অধিকাংশ রাজ্যে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা কমতে শুরু হওয়ায় হাসপাতালগুলোতে চাপ কিছুটা কমেছে।
তবে তামিলনাড়ু, ওড়িশা, আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়ে বাড়ছে সক্রিয় রোগী। পশ্চিমবঙ্গেও গত ২৪ ঘণ্টায় তা বেড়েছে ৬৭১ জন। এই পরিস্থিতিতেই দেশে চলছে ভ্যাকসিন কর্মসূচি। গত ২৪ ঘণ্টায় ভ্যাকসিন পেয়েছেন ১৪ লাখ ৫৮ হাজার ৮৯৫ জন। এখন পর্যন্ত ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সী ৯২ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষ ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন।