চাকরির পেছনে না ছুটে মৎস্য উৎপাদনে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠিত হতে নিজেকে উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলে সমাজের বেকারত্ব গুটাতে পারবে আমাদের যুব সমাজ। কাজেই শুধু চাকরি নয়, বরং খামারে মনোযোগ দিয়ে সেখান থেকে অর্থ উৎপাদন করা সম্ভব।
শনিবার (২২ মে) সকালে বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে মৎস্যজীবী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় ভিডিও বার্তায় এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
সরকারপ্রধান বলেন, যেকোনো ছেলেমেয়ে লেখাপড়া শিখে শুধু চাকরির পিছনে না ছুটে নিজেরাই যদি মৎস্য খামার করে, মৎস্য খামার থেকে মাছ উৎপাদন করে এবং সেটা যদি বিক্রি করে তাহলে পয়সা পেতে পারে।
খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পের দিকে মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সারাদেশে ১০০টা অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। এই অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে তোলার। সেখানে খাদ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে তোলা যায় এবং সেখানে মৎস্যজাত যেকোনো পণ্য প্রক্রিয়াজাত করে বাজারজাত করতে পারে, সেই সুযোগটাও সৃষ্টি হচ্ছে।
কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে বিনা জামানতে ঋণ নিয়ে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর সুযোগের কথা তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।
মৎস্য উৎপাদন বাড়াতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ নদীনালা, খাল-বিলের দেশ। বাংলাদেশে শত শত নদী রয়েছে। তাছাড়া খাল-বিল জলাধারগুলি সংস্কারের কাজ করে যাচ্ছি। সেখানে যাতে আরও বেশি পরিমাণ মাছ উৎপাদন হয়, তার ব্যবস্থা নিচ্ছি।
বিভিন্ন মেয়াদে যুব সমাজকে ট্রেনিং দেওয়া, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা, জলাধারগুলি সংস্কার করা, মাছ উৎপাদন বাড়াতে গবেষণার ব্যবস্থা করাসহ সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
মাছের পুষ্টিগুণের কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, সবচেয়ে নিরাপদ পুষ্টি মাছই দেয়। একটা মানুষ যদি ৬০ গ্রাম মাছ খেতে পারে, সেটা তার জন্য যথেষ্ট। আমরা সেখানে অন্তত ৬২ গ্রাম পর্যন্ত নিতে পারি বা দিতে পারি, সেই সুযোগটাও সৃষ্টি হচ্ছে।
মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, আমাদের মাছের উৎপাদন যেখানে ২৭ লাখ মেট্রিক টন ছিল, এখন আমরা প্রায় ৫০ লাখ মেট্রিক টনের কাছাকাছি উৎপাদন করা শুরু করেছি। আর ইলিশ উৎপাদনে পৃথিবীতে আমরা কিন্তু এখন এক নম্বর দেশ।
সভায় ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ প্রান্তে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, কেন্দ্রীয় কার্যকরী সদস্য শাহাবুদ্দীন ফরাজী, এ বি এম রিয়াজুল কবির কাওছার। সভায় সভাপতিত্ব করেন মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি সায়ীদূর রহমান এবং সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শেখ আজগর।