করোনার অদৃশ্য নতুন ছত্রাক ’ব্ল্যাক ফঙ্গাস’ এ ঢাকায় এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। গত তিন দিন আগে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। নতুন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করা ব্যাক্তির নাম পরিচয় প্রকাশ করা হয়নি।
মঙ্গলবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরীক্ষা নিরীক্ষায় দেখা গেছে, ওই রোগী অন্যান্য রোগের পাশাপাশি মিউকরমাইকোসিস বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত ছিলেন।
ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত একজন রোগী এখনও বারডেম হাসপাতালে ভর্তি আছেন। শনাক্ত হওয়া আরেকজন রোগী অন্যত্র চলে গেছেন।
মঙ্গলবার বারডেম হাসপাতালের রেসপিরেটরি মেডিসিন বিভাগের প্রধান অধ্যাপক এম দেলোয়ার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ভর্তি থাকা রোগীর অবস্থা শঙ্কাজনক নয়। তাকে ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। ওষুধের দাম অনেক বেশি। তাই স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার কর্মকর্তাদের সঙ্গে ওষুধের ব্যাপারে যোগাযোগ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, তিন দিন আগে ৬৫ বছর বয়সী একজন রোগীর মৃত্যু হয়েছে বারডেমে। এই রোগীর অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস ছিল। তার কিডনির সমস্যাও ছিল। তিনি কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর সুস্থ হয়েছিলেন। চিকিৎসার সময় বোঝা যায়নি যে, তিনি মিউকোরমাইকোসিসে আক্রান্ত ছিলেন। মৃত্যুর পর এটা জানা গেছে।
অধ্যাপক এম দেলোয়ার হোসেনের তত্ত্বাবধানে বারডেম হাসপাতালের একটি কেবিনে ৫৫ বছর বয়সী ব্ল্যাক ফাঙ্গাস শনাক্ত হওয়া রোগীটির চিকিৎসা চলছে। রোগীর বাড়ি সাতক্ষীরা জেলায়। প্রায় এক মাস আগে তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছিলেন। সুস্থ হয়ে তিনি বাড়ি যান। কিন্তু আবার জ্বর দেখা দিলে তিনি খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেন এবং সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে বারডেমে নেওয়া হয়।
অধ্যাপক এম দেলোয়ার হোসেন জানান, এই রোগী চার-পাঁচ বছর ধরে ডায়বেটিসে ভুগছেন। এরপর তিনি কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। জ্বর ও কাশি কমে না যাওয়ায় চিকিৎসকেরা তাকে যক্ষ্মার ওষুধও দিয়েছেন। এখন দেখা যাচ্ছে, তিনি মিউকরমাইকোসিসে আক্রান্ত।
অণুজীববিজ্ঞানী বলছেন, মিউকোরমাইকোসিস নতুন কোনো ছত্রাক নয়। এই ছত্রাক পরিবেশেই আছে। রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কম এমন ব্যক্তিদের এই ছত্রাকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি।
কারা আক্রান্ত হতে পারেন এমন প্রশ্নে অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন বলেন, যাদের অনিয়ন্ত্রিত ডায়বেটিস থাকে তাদের ঝুঁকি বেশি। আবার স্টেরয়েড গ্রহণ করা কোনো কোনো ব্যক্তিও এতে আক্রান্ত হতে পারেন।
ভারতে মিউকরমাইকোসিস বা ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস’ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। দেশটিতে এ পর্যন্ত ৮ হাজার ৮০০ জন এই ফাঙ্গাসে সংক্রমিত হয়েছে।