শিবিরের হামলায় মুমূর্ষু অবস্থায় ২০১৩ সাল হাসপাতালে ভর্তি বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমানে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)-এর সমন্বয়ক হিসেবে কর্মরত তন্ময় আহমেদকে শিবির বলে অপপ্রচার করছেন নেত্র নিউজ নামের এক ওয়েবসাইটের প্রধান সম্পাদক তাসনিম খলিল। সম্প্রতি এ বিষয়ে তাসনিম তার ভেরিফায়েড পেজ থেকে একাধিক মন্তব্য করেন।
গত ১৬ জুলাই তাসনিম খলিল তার ফেসবুক পেজে করা এক পোস্টের কমেন্টে তন্ময় আহমেদকে ‘সাবেক শিবির কর্মী, বর্তমানে সিআরআইয়ের কো-অর্ডিনেটর’ বলে মন্তব্য করেন। পরবর্তীতে পৃথক আরেক ফেসবুক পোস্টে সরাসরি তন্ময় আহমেদকে উল্লেখ না করে তার রাজনৈতিক পরিচয়কে কেন্দ্র করে আক্রমণ করেন।
তন্ময় আহমেদের বিরুদ্ধে তাসনিম খলিলের এমন মন্তব্যের পর বেশ কিছু ভুয়া ফেসবুক পেজ থেকে তন্ময় আহমেদ ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু হয়। কলেজ জীবনে তন্ময় আহমেদ শিবির করতেন বলে এই পেজগুলোতে অভিযোগ করা হয়। অথচ তন্ময় আহমেদ এইচএসসি পরীক্ষা দেন সেন্ট জোসেফ কলেজ থেকে যা বাংলাদেশে ছাত্র রাজনীতি মুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সমাদৃত।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু বক্কর প্রধান বলেন, ‘২০১৩ সালের ৮ আগস্ট গাইবান্ধার পলাশবাড়ী এলাকায় শিবিরের হামলায় গুরুতর আহত হয় আমাদের এলাকার ছেলে তন্ময় আহমেদ মুন। সে সময় বুয়েটে পড়ালেখা করত আর বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিল মুন। তার পরিবার ও সে সর্বদা আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেছে। তার চাচা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সেক্রেটারি ছিল। এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সময় তন্ময়ের চাচা এবং আমি এক সঙ্গে আন্দোলন করেছি। সে সময় তার হাতে গুলি করা হয়েছিল। তার বাবা এবং পরিবারের অন্য সদস্যরা সর্বদা আওয়ামী ঘরনার মানুষের সঙ্গেই চলেছে। যে ছেলেটা শিবির ও জঙ্গিদের বিরুদ্ধে লেখালেখি করার জন্য মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালে পড়ে ছিল শিবির কর্মীদের হামলায়, তাকে কিভাবে শিবির বলছে আর কোন ভিত্তিতে শিবির বলছে আমার জানা নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘মুন (তন্ময় আহমেদ) যখন হাসপাতালে ছিল, আমিও তাকে দেখতে গিয়েছি। হাসপাতালেও এক শিবির কর্মী আটক হয় তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে যাওয়ার পর।’
২০১৩ সালে তন্ময় আহমেদের ওপর হামলার পর দেশের বেশ কিছু জাতীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের শিরোনামে জঙ্গি গোষ্ঠী, আনসারুল্লাহ’র সদস্যদের হামলার শিকার হওয়ার কথা জানা গেলেও বিষয়টিকে ‘এলাকার গ্যাঞ্জাম’ হিসেবে উপস্থাপন করেন তাসনিম খলিল। মুমূর্ষু তন্ময় আহমেদকে হামলার উদ্দেশ্যে হাসপাতালে আটক হওয়া যুবকের পরিচয় দিতে গিয়ে তৎকালীন সময় দেয়া এক সাক্ষাৎকারে রংপুর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রউফ বলেন, ‘আটক রায়হান রংপুর মেডিকেল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র এবং শিবিরকর্মী। সে ডা. পিন্নু ছাত্রাবাসের আবাসিক ছাত্র।’
তন্ময় আহমেদকে নিয়ে চলমান এই অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়েছে গাইবান্ধা পলাশবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগ। সেখানে লেখা হয়, তার (তন্ময় আহমেদ) এবং তার পরিবার সম্পর্কে সম্প্রতি ফেসবুকে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়াচ্ছে তাসনিম খলিল। পরিবার সূত্রে তন্ময় আহমেদ ও তার পরিবার আওয়ামী ঘরনার রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। সেই সঙ্গে তিনি যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গি ও জামায়াত শিবিরের বিরুদ্ধে কলম ধরার কারণে একাধিকবার আক্রমণের শিকার হয়েছেন। মুমূর্ষু অবস্থায় হাসপাতালেও তাকে হত্যার চেষ্টা করেছে জামায়াত শিবির। বর্তমানে এলাকার গর্ব হিসেবে তিনি সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। তাকে এবং তার পরিবার নিয়ে এ ধরনের মিথ্যা প্রচারের তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।