করোনা সংক্রমণ রোধে সকলকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ভাইরাস রোধে লকডাউন সরকারের কেবলমাত্র সাময়িক উপাদান। তবে সারা দেশে প্রতিটি মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা হবে। প্রত্যেক জনগণকে ভ্যাক্সিনের আওতায় আনতে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে।
বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অফিস কক্ষে যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় এসব কথা বলেছেন আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেন, কেবল লকডাউন দিয়েই করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব না। এটা সংক্রমণ রোধের একটি উপাদান মাত্র। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করতে হলে সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক পরতে হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। মাস্ক পরিধান করলে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে মানুষ ৭০ভাগ নিরাপদ থাকবে। তাই জনসাধারণকে মাস্ক পরা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বাধ্য করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই এ নির্দেশনা অনুযায়ী মাঠে থাকবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা।
মন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস বিরোধী তৎপরতা দেশের জনগণকে সম্পৃক্ত করা হবে। সামাজিক রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় নেতাসহ জনপ্রতিনিধিদেরকে সম্পৃক্ত করার কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রীর কথার সূত্র ধরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু যুগান্তরকে বলেন, সীমিত লকডাউন, লকডাউন, কঠোর লকডাউন-সব পরিস্থিতিতেই মন্ত্রী মহোদয় নিয়মিত অফিস করছেন। সংক্রমণ রোধে যা যা করা দরকার সবই তিনি করছেন। লকডাউন পরিস্থিতিতে অন্যান্য মন্ত্রীরা যেখানে বাসা থেকে বের হচ্ছেন না, সেখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একদিন বাসায় থাকছেন না। ঈদের ছুটিতেও তিনি কাজ করেছেন। ঈদ পরবর্তী লকডাউনে গত রোববার থেকে তিনি পুরোদমে অফিস করছেন।
রোববার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটের সঙ্গে ছোট ছোট পৃথক বৈঠক করেছেন। সোমবার কেবিনেট এবং নিকারের বৈঠক করেছেন। এই দুটি বৈঠক শেষে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত অফিস করেছেন। মঙ্গলবার লকডাউন পরিস্থিতি নিয়ে কেবিনেটে হাইপ্রোফাইল সভা করেছেন। বুধবার অফিসে এসে গতানুগতিক কাজ করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার তিনি গাজীপুর জেলা সফর করবেন।এ সময় কাশিমপুর কারাগারের প্যারেড গ্রাউন্ডে ৫৮ তম কারারক্ষী ও মহিলা কারারক্ষী বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্সের রিক্রুটদের শপথগ্রহণ করাবেন। পাশাপাশি সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। রোববার জাতীয় শোক দিবস পালন সংক্রান্ত আইনশৃঙ্খলা সভায় অংশগ্রহণ করবেন।
শরীফ মাহমুদ অপু আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই ঈদের ১০ দিন আগে পরিবহণ শ্রমিক মালিকদের সঙ্গে মন্ত্রীমহোদয় বৈঠক করেছেন। বৈঠক করেছেন শিল্প কারখানার মালিকদের সঙ্গেও। গত ১৭ জুলাই বিজিবি ৯৬তম রিক্রুট ব্যাচের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় যান তিনি।
এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব হলো আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদের। আর এসব সংস্থার অভিভাবক হলো স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরা একদিন কাজ না করলে করোনার পরিস্থিতি আরোভয়াবহ আকার ধারণের আশঙ্কা রয়েছে। তাই আমি নিয়মিত অফিস করছি এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে অন্যান্য কর্মকর্তারাও অফিস করছেন।