আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় গুরুত্বপূর্ণ শহর জালালাবাদের দখল নিয়েছে তালেবান। কোনো যুদ্ধ ছাড়াই রোববার সকালে শহরটির দখল নিয়েছে তালেবান।
জালালাবাদ আফগানিস্তানের পঞ্চম বৃহত্তম শহর। পূর্বাঞ্চলীয় নানগারহার প্রদেশের রাজধানী জালালাবাদ। আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল থেকে জালালাবাদের দূরত্ব ৮০ মাইল। জালালাবাদ দখলের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে অন্তত ২০টির রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নিল তালেবান।
আফগান কর্মকর্তারা জানান, জালালাবাদ শহর দখলের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের সংযোগ সড়কের দখলও তালেবানের হাতে গেছে। খবর আল জাজিরার
সকালে তালেবান সদস্যরা অনলাইনে ছবি পোস্ট করেছে, সেখানে তাদের জালালাবাদের গর্ভনরের অফিসে দেখা গেছে।
জালালাবাদভিত্তিক এক আফগান কর্মকর্তা বলেন, শহরটির দখল নিতে কোনো লড়াই নেই। কারণ, গভর্নর তালেবানের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। বেসামরিক মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য এটাই ছিল একমাত্র উপায়।
এক স্থানীয় বলেছেন, আমি ঘুমিয়েছিলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি পুরো শহরজুড়ে তালেবানের পতাকা উড়ছে।
এর আগে শনিবার আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের অন্যতম প্রধান শহর মাজার-ই-শরিফ দখল করে তালেবান। দেশটির প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি সফরের কয়েকদিনের মধ্যেই শহরটির নিয়ন্ত্রণ তালেবানের হাতে গেল।
আফগানিস্তানের অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র মাজার-ই-শরিফ। উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তানের সীমান্তসংলগ্ন শহরটি গত শতকের নব্বইয়ের দশকে তালেবানের দখলে ছিল।
সশস্ত্র সংগঠনটির যোদ্ধারা গতকাল দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় লোগার প্রদেশ দখল করে। লোগার প্রদেশের আইনপ্রণেতা হোদা আহমাদি বলেন, তালেবান যোদ্ধারা চর আসিয়াব জেলায় পৌঁছেছেন। তারা কাবুল থেকে মাত্র ১১ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছেন।
সরকারি কর্মকর্তা ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, কাবুলে সাঁড়াশি আক্রমণ পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছে তালেবান। পাশাপাশি দেশজুড়ে আরও প্রদেশ ও শহর দখলে অভিযান অব্যাহত রেখেছে তারা।
আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে আফগানিস্তান থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোর সেনাদের পুরোপুরি প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। এ পরিস্থিতিতে পশ্চিমা দেশগুলো-সমর্থিত প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির সরকারকে হটিয়ে আফগানিস্তানে নিজেদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া তালেবান। লক্ষ্য অর্জনে সরকারি সেনাদের বিরুদ্ধে তালেবান তাদের অভিযান জোরদার করেছে। তারা একের পর এক এলাকা দখল করে অগ্রযাত্রা অব্যাহত রেখেছে।
রাজধানী কাবুলের পতন নিয়ে ইতোমধ্যে দেশ-বিদেশে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে রাজধানী কাবুলের পতন ঘটতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।