সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপপ্রচারে আইনি ব্যবস্থা

বিদেশে থেকে দেশের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে অপপ্রচার চালানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সেই দেশের আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ব্যক্তি-বিশেষের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয় এবং সরকারের বিরুদ্ধে অহেতুক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে, দেশ এবং বিদেশ থেকে।

সোমবার সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম মানুষকে অবারিত সুযোগ করে দিয়েছে। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমাজে অস্থিরতা তৈরি করার সুযোগ রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে অনেক সময় অস্থিরতা তৈরি করা হয়।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, দেশের বিরুদ্ধে, ব্যক্তিবিশেষের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হয় এবং সরকারের বিরুদ্ধে অহেতুক অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। কিন্তু মূল ধারার গণমাধ্যমগুলো সঠিকভাবে কাজ করছে। এই করোনার মধ্যে অনেক ধরনের গুজব রটানোর চেষ্টা করা হয়েছে। মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে, দেশ এবং বিদেশ থেকে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের মন্ত্রণালয় এক্ষেত্রে শৃঙ্খলা আনার জন্য অনেকগুলো কাজ করেছে। যেমন অনলাইন গণমাধ্যমের রেজিস্ট্রেশন দেওয়া শুরু, আইপিটিভি রেজিস্ট্রেশন দেওয়া শুরু করা এবং কিছু কিছু অনলাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আমরা দেখতে পাচ্ছি, বিদেশ থেকে বসে বসে তারা বিভিন্ন ব্যক্তিবিশেষ এবং নির্দিষ্ট কয়েকটি অনলাইন পোর্টাল ব্যবহার করে…। করোনা যেমন নানা ধরনের ভ্যারিয়েন্ট প্রকাশ করে বিভিন্ন সময়, এসব অনলাইন পোর্টালগুলোর দেখা যায় মাঝে মধ্যে ভিন্ন ভিন্ন পরিচয় প্রকাশ হয়। কিন্তু এগুলোর পেছনে একই ব্যক্তিবিশেষ, তারা অপপ্রচার চালাচ্ছে।

তিনি বলেন, রিপোর্টার্স উইদাউট ফ্রন্টিয়ার (রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস) প্রধানমন্ত্রীর ব্যাপারে একটি আপত্তিকর রিপোর্ট প্রকাশ করেছে আপত্তিকর শব্দ ব্যবহার করে। আমরা তথ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সেটির প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম। আমরা জানিয়েছিলাম এটা সংশোধন করা না হলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেবো। রিপোর্টার উইদাউট ফ্রন্টিয়ারের অফিস ফ্রান্সে। ফরাসি আইনে ফরাসি আইনজীবীর মাধ্যমে তাদের লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, ফরাসি আইন অনুযায়ী এমনকি ইউরোপিয়ান আইন অনুযায়ী ব্যক্তিবিশেষকে কটাক্ষ করে, টার্গেট করে তারা যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল, তা করতে পারে না। ফরাসি আইনের সেই ধারা উল্লেখ করে, ইউরোপিয়ান আইনের সংশ্লিষ্ট ধারা উল্লেখ করে লিগ্যাল নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

‘আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি, অন্যান্য দেশ থেকেও যারা এ ধরনের কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে একই ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

তিনি বলেন, ওটিটি প্লাটফর্মে কোনো কন্টেন্ট রিলিজ করতে এখন কোনো অনুমোদনের প্রয়োজন নেই। ওটিটিতে সিনেমা রিলিজ করতে কোনো অনুমোদনের প্রয়োজন নেই, নাটক প্রকাশ করতেও কোনো অনুমোদনের প্রয়োজন নেই। কিংবা ওয়েবসিরিজ আকারে প্রকাশ করার জন্য অনুমোদনের প্রয়োজন নেই।

তিনি বলেন, ওটিটির প্রতিটি কন্টেন্ট সেন্সর করা দুরূহ কাজ। বছরে ৫০টি বা ১০০টি সিনেমা রিলিজ হয়, সেগুলো সেন্সর করা সহজ। কিন্তু বছরে শত শত, হাজার হাজার কন্টেন্ট ওটিটিতে প্রকাশ পায়, সেগুলো সেন্সর করা দুরূহ কাজ। সে কারণে ভারতে যেভাবে করা হচ্ছে এবং অন্যান্য দেশে যেভাবে করা হচ্ছে, সেভাবে একটি নীতিমালার খসড়া আমরা করেছি। সেটা আরও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আমরা জারি করবো।

মন্ত্রী বলেন, যাতে মানুষকে ভুল পথে পরিচালিত করে এমন কোনো কন্টেন্ট না যায়। আমাদের দেশে বিজাতীয় সংস্কৃতি উৎসাহিত হয় সে ধরনের কোনো কনটেন্ট যাতে না যায়। কিংবা আমাদের তরুণ সমাজকে বিভ্রান্ত করতে পারে, বিপথগামী করতে পারে, এমন কোনো কন্টেন্ট না যায়। সেগুলোকে মাথায় রেখে আমরা একটি খসড়া নীতিমালা তৈরি করেছি।