প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভোট ডাকাতের ব্যান্ড বলে দাবি করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের পদত্যাগ এবং নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন একমাত্র পথ বলে মন্তব্য করেন রিজভী। আর তা না হলে দেশকে আওয়ামী লীগ সরকার ভয়ঙ্কর দুঃস্বপ্নের দেশে পরিণত করবে।
বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনাসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
‘গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন এবং জনআকাঙ্ক্ষা’ শীর্ষক এই আলোচনাসভার আয়োজন করে ‘জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ৭১’ কেন্দ্রীয় কমিটি।
সংগঠনের সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সহসাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, খোন্দকার আবদুল হামিদ ডাবলু, ছাত্রদলের সাবেক নেত্রী রাহেলা আক্তার রঞ্জু প্রমুখ।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশে একটা স্বচ্ছ নির্বাচন হবে এটিই হচ্ছে জনআকাঙ্ক্ষা। জনগণ যাকে ইচ্ছা ভোট দেবে। কারণ জনগণ হচ্ছে দেশের মালিক। কিন্তু এটা তো সরকার ভুলে গেছে। তারা তো আবারও কেএম নূরুল হুদার মতো কাউকে নির্বাচন কমিশনার বানাবে। এ ছাড়া কাউকে নির্বাচন কমিশন বানাবে না। আজকে ডাকাতির নির্বাচন চান প্রধানমন্ত্রী। সেই নির্বাচন বৈধতা দান করেন তার মন্ত্রী-এমপি আর সাঙ্গপাঙ্গরা। সুতরাং নিরপেক্ষ নির্বাচন কেমনে হবে?
রিজভী বলেন, বাংলাদেশ থেকে ১১ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেল সেটি নিয়ে তো কথা বলে না। সেই টাকা দিয়ে মালয়েশিয়া, কানাডার বেগম পল্লী কেনা হচ্ছে। দুবাইয়ে, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রে ও যুক্তরাজ্যে বিলাসবহুল বাংলো কেনা হচ্ছে। কারণ এ দেশে যদি কোনো কিছু ঘটে তাহলে তারা আরব্য রজনীর আলিফ লায়লার মতো সুখে শান্তিতে বিদেশে বসবাস করতে পারবেন। এটাই হচ্ছে তাদের লক্ষ্য।
তিনি বলেন, দেশে একদিকে শেখ হাসিনার জন্মদিনের জৌলুশ চলছে। অন্যদিকে দেশে নারীর ক্ষমতায়ন হ্রাস পেয়েছে। ইতিহাসে কিন্তু নবাব সিরাজউদ্দৌলার কথাও লেখা আছে। মীরজাফরের নামও লেখা আছে। আজকে ওবায়দুল কাদের বলেছেন প্রধানমন্ত্রী নাকি ব্র্যান্ড? তো প্রধানমন্ত্রী কীসের ব্র্যান্ড? তিনি তো টাকা পাচার করার ব্র্যান্ড, সাহেদ-সাবরিনার উত্থান আর গুম-খুনের ব্র্যান্ড? তিনি তো গণতন্ত্র হত্যাকারী ব্র্যান্ড। দিনের ভোট নিশিরাতে করার ব্র্যান্ড। এটা তো ওবায়দুল কাদেরের বলা উচিত ছিল। তারা সেটি বলেননি।
রিজভী বলেন, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে হলে গ্রহণযোগ্য সরকার থাকতে হবে। সরকারের পতনের মধ্য দিয়ে যে নিরপেক্ষ ও নির্দলীয় নির্বাচন কমিশন হবে, সেই কমিশনের অধীনে দেশের মানুষের কাঙ্ক্ষিত নির্বাচন হবে।
সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলেন, সার্বজনীন ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। বিএনপিকে ক্ষমতায় আনার জন্য নয়, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে আন্দোলনে নামতে হবে। তবেই জনআকাঙ্ক্ষার বাংলাদেশ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার দেশের সব সংস্কৃতি বিনষ্ট করেছে। আওয়ামী লীগের চরিত্রের সঙ্গে না মিললে কারও রেহাই নেই। তা না হলে— সম্রাট, পাপিয়া বা জিকে সম্রাট জেলে কেন? কারণ ভাগাভাগি, আওয়ামী লীগের সঙ্গে বনাবনি হয়নি। আজকে আওয়ামী লীগের মধ্যে গৃহবিবাদ শুরু হয়েছে।
আবদুস সালাম আজাদ বলেন, এই সরকার ভোট, গণতন্ত্র ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত হেনেছে। আজকে নব্য বাকশাল কায়েম করে একদলীয় শাসন চালাচ্ছে সরকার। আসলে তারা জনগণের সরকার নয়। তাদের অধীনে নির্বাচনে যাওয়া যায় না। যে যত কথা বলুক, জনগণের দুশমন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ছাড়া দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না।