শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনরত ও অনশনে থাকা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলার সময় তাদের আন্দোলনের প্রশংসা করেছেন কথাসাহিত্যিক ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
তিনি বলেন, ‘তোমাদের এই আন্দোলনের ফলে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে একটা মডিফিকেশন হয়েছে। এটা নতুন করে বিশ্লেষণ করতে হবে যাকে ভিসি হিসেবে পাঠানো হয়েছে তিনি কি ভিসি হওয়ার যোগ্য কিনা! আমি অনেক কিছু জানি কিন্তু নিজেদের দুর্বলতা বলতে ভালো লাগে না। তোমরা যা করেছো সেটার কোনো তুলনা নাই। যে আন্দোলনটা তৈরি করেছো দেশের প্রত্যেকটা ইয়ং (তরুণ) ছেলেমেয়ে তোমাদের সঙ্গে আছে। অনেক বড় বড় মানুষ যোগাযোগ করেছেন।’
‘শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ও খাদ্য সহায়তার জন্য টাকা দেওয়ার অভিযোগে পাঁচজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।’ এ ঘটনা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর একটা স্মারকগ্রন্থে আমার কাছে একটা লেখা চেয়েছিল। সেই লেখাটার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আমাকে ১০ হাজার টাকা সম্মানি দেয়া হয়েছে। আমি এই সম্মানির টাকাটা নিয়ে আসছি, শাবির এই আন্দোলনের ফান্ডে এই টাকা দিচ্ছি, তোমরা রাখো। তোমাদের অর্থ দিয়ে সাহায্য করার জন্য আমাকেও সিআইডি অ্যারেস্ট করুক।
পরে ড. ইয়াসমিন হক বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের ঢাকা থেকে সিআইডি গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু আমরা সিআইডি পুলিশ বুঝি না, আমাদের কথা দিয়েছে ছেলেদের ছেড়ে দেবে, তারা কালকেই ছেড়ে দেবে।’
এদিকে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবাসহ অন্যান্য খবর নিতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘তোমরা কি করেছো তা তোমরা টের পাচ্ছো না। আমি ধরে নিয়েছিলাম এখানে একটি ডাক্তারের টিম আছে, নিয়মিত চিকিৎসা দিচ্ছে।’
ডাক্তার না থাকায় তিনি বলেন, ‘এখানে এসে দেখি শুধু যে ডাক্তার নাই সেটা না, যারা ছিল তাদের ভয়ভীতি দেখিয়ে দূর করে দেওয়া হয়েছে। এর চেয়ে বড় অমানবিক ব্যাপার আর কি হতে পারে। এটা অলমোস্ট ছেলেমেয়েদের মার্ডার করার একটা পরিকল্পনা। আমি শুনে খুবই দুঃখ পেলাম, সম্ভব হলে আমি উপরের মহলকে জানাবো।’
পরে শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়ার বিষয়ে আশ্বাস দিয়ে তাদের অনশন ভাঙার কথা আহ্বান জানান তিনি। পরে শিক্ষার্থীরা সবাই একসঙ্গে ক্যাম্পাসে অনশন ভাঙ্গার ইচ্ছা পোষণ করলে সবাইকে ক্যাম্পাসে আনা হয়। সকাল ১০টা ২০ মিনিটের দিকে শিক্ষার্থীরা অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের হাতে পানি পান করে অনশন ভাঙ্গেন।