ইউক্রেনে রাশিয়ার সর্বাত্মক হামলা গড়িয়েছে দ্বিতীয় দিনে। পূর্ব ইউরোপের এই দেশটি জুড়ে চলছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর ভয়াবহ হামলা। এর মধ্যে বীরত্বের কারণে ইউক্রেনের ১৩ সেনাসদস্য ভাসছেন মরণোত্তর প্রশংসায়। আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকৃতি জানানোয় রাশিয়ার বোমা হামলায় তারা নিহত হন।
শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। এছাড়া হামলার দ্বিতীয় দিনেও ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে দফায় দফায় বিস্ফোরণ হয়েছে। একটি রুশ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার খবরের পাশাপাশি দেশটির একটি শহরে ব্যাপক গোলাগুলির ভিডিও সামনে এসেছে।
বিবিসি জানিয়েছে, কৃষ্ণ সাগরের ছোট্ট দ্বীপ স্নেক আইল্যান্ডে দায়িত্বপালন করছিলেন ইউক্রেনের ১৩ জন সেনাসদস্য। বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ঘোষণা দেওয়ার পর স্নেক আইল্যান্ড অবরোধ করে রাশিয়ার একটি যুদ্ধ জাহাজ।
পরে রুশ সেনারা ইউক্রেনের সেনাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানায়। কিন্তু ইউক্রেনের ওই ১৩ জন সেনা আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকৃতি জানান। এরপরই সেখানে বোমা হামলা চালায় রুশ সামরিক বাহিনী এবং ১৩ ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হন।
এদিকে বোমা হামলায় নিহত হওয়ার আগে যুদ্ধ জাহাজে অবস্থানরত রুশ সেনাসদস্যদের সঙ্গে ইউক্রেনের সেনাদের শেষ মুহূর্তের কথপোকথনের একটি অডিওক্লিপ টুইটার, টিকটকসহ অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলোতে ভাইরাল হয়েছে।
সেখানে রুশ যুদ্ধ জাহাজ থেকে ইউক্রেনের সেনাদের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, ‘আমি আপনাকে আপনার অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণের পরামর্শ দিচ্ছি, না হলে আমি গুলি চালাব। আপনি কি আমার কথা শুনতে পেয়েছেন?’ জবাবে ইউক্রেনের সেনারা আত্মসমর্পণ করতে অস্বীকৃতি জানান এবং একপর্যায়ে রাশিয়ার বোমা হামলায় তারা সবাই নিহত হন।
এদিকে সেনাদের এই বীরত্বের ভূয়সী প্রসংসা করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। এছাড়া বীর এই সেনাদের মরণোত্তর পুরস্কার দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
জেলেনস্কি বলেন, ‘ন্সেক আইল্যান্ডে তারা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে গেছেন। আত্মসমর্পণ না করে তারা সবাই বীরত্বের সঙ্গে মৃত্যুকে বরণ করেছেন। হিরো অব ইউক্রেন (ইউক্রেনের বীর) হিসেবে তাদের সবাইকে মরণোত্তর পুরস্কার দেওয়া হবে। দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করায় চিরস্থায়ী এই পুরস্কার পাবেন তারা।’