আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সিরাজগঞ্জ জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। দীর্ঘ সাত বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে এ সম্মেলন। এই সম্মেলন ঘিরে নেওয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি। ইতোমধ্যে রাজনৈতিক উৎসবের নগরীতে পরিণত হয়েছে পুরো সিরাজগঞ্জ জেলা।
সম্মেলনের ভেন্যু নির্ধারণ করা হয়েছে সিরাজগঞ্জ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে । সম্মেলনকে ঘিরে সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছেন। জেলা শহরের প্রতিটি রাস্তায় তৈরি করা হয়েছে বিশাল বিশাল তোরণ। ইতোমধ্যেই পদপ্রত্যাশীদের ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে সিরাজগঞ্জ শহরসহ অন্যান্য উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থান।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে এই সম্মেলন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সম্মেলনের মাধ্যমে আরও শক্তিশালী হবে সিরাজগঞ্জ আওয়ামী লীগ। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী জনসংখ্যার ভিত্তিতে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ৪শ’ জনের বেশি কাউন্সিলর রয়েছে। কাউন্সিলররা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করবেন। তাই ইতোমধ্যে প্রার্থীরা দোয়া, আশীর্বাদ, ভোট প্রার্থনাসহ জেলার বিভিন্ন উপজেলাতেও কাউন্সিলরদের সঙ্গে মত বিনিময় করছেন।
এবারের ত্রিবার্ষিক সম্মেলনে সভাপতি পদে বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট কেএম হোসেন আলী হাসান, সাবেক মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ বিশ্বাস, জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান সহসভাপতি সিরাজগঞ্জের জজকোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট আব্দুর রহমান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা বিমল কুমার দাস প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সাধারণ সম্পাদক পদে জেলা আওয়ামী লীগের (ভারপ্রাপ্ত) সাধারণ সম্পাদক আলহাজ আব্দুস সামাদ তালুকদার, কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সুইট, বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক ড. জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক শামসুজ্জামান আলো, জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন ফারুক প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তবে এদের মধ্যে প্রচার-প্রচারণা থেকে শুরু করে গ্রহণযোগ্যতার দিক থেকে সভাপতি পদে সিনিয়র নেতা বর্তমান ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অ্যাডভোকেট কেএম হোসেন আলী হাসান এবং সাধারণ সম্পাদক পদে কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সুইট এগিয়ে রয়েছেন।
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কে এম হোসেন আলী হাসান বলেন, ‘সম্মেলন ঘিরে আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছি। সম্মেলনের জন্য জেলা আওয়ামী লীগের সবাই প্রস্তুত। ২০২০ সালের ২২ নভেম্বর বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেন। দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে আমি নেতাকর্মীদের পার্টি অফিসমুখী করেছি। দলের মধ্যে যে বিভেদ ছিল তা দূর করে আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করেছি। সিরাজগঞ্জ আওয়ামী লীগ এখন ঐক্যবদ্ধ। এবারের সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোট আর আগত কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সিদ্ধান্তে আমাকে দায়িত্ব দিলে অবশ্যই পালন করবো ইনশাল্লাহ।
ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদার বলেন, উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। দলকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে কাউন্সিলররা যাকে সাধারণ সম্পাদক পদে চান তার সঙ্গে থেকেই দলের জন্য কাজ করবো।
কৃষকলীগের সহ-সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন সুইট বলেন, আমি একজন আওয়ামী পরিবারের সন্তান। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক । ছাত্রজীবনে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলাম। দলকে সুসংগঠিত ও শক্তিশালী করতে সব সময় কাজ করেছি। প্রচারণায় যেখানে গেছি সেখানেই সবার সাড়া দিয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যদি আমাকে এ দায়িত্ব দেয় আমি যথার্থ ভাবে সেটা পালন করবো। বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার সিদ্ধান্তই আমার কাছে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।
এর আগে ২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারী সর্বশেষ সিরাজগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সে সময় সাবেক মৎস্য ও প্রাণী সম্পাদ মন্ত্রী আব্দুল লতিফ বিশ্বাস সভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবু মোহাম্মদ গোলাম কিবরিয়া সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০২০ সালের ২২শে নভেম্বর তাদেরকে অব্যহতি দিয়ে কে এম হোসেন আলী হাসান কে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও আব্দুস সামাদ তালুকদারকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয়।