সব বিভাগে নভোথিয়েটার হবে : প্রধানমন্ত্রী

সব বিভাগীয় শহরে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার স্থাপন করতে সরকারের উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (০৩ মার্চ) বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, বিজ্ঞানী, গবেষক এবং বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’, এনএসটি ফেলোশিপ’ এবং ‘বিশেষ গবেষণা অনুদান’ দেওয়ার অনুষ্ঠানে (ভার্চ্যুয়াল) এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘সব বিভাগীয় শহরে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার আমরা স্থাপন করবো। আমাদের ৮টি বিভাগ এবং ৮টি বিভাগেই যেন নভোথিয়েটার হয়। ইতোমধ্যে ৪ থেকে ৫টি বিভাগে নভোথিয়েটার স্থাপনের কাজ আমরা পাশ করে দিয়েছি। বাকিগুলো আমরা করবো। প্রত্যেক বিভাগে করবো, যাতে আমাদের ছেলে-মেয়েরা আরও ভাল শিক্ষা নিতে পারে এবং জ্ঞান অর্জন করতে পারে। ’

বিজ্ঞান ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে গবেষণা বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিজ্ঞানের গবেষণা এবং চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণা, মেডিক্যালে আমাদের গবেষণা কম, সেখানে আমি গুরুত্ব দিচ্ছি। আরও বেশি করে আমাদের গবেষণা করতে হবে। এটাই পারে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে। ’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে আমরা দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে পারতাম না। যদি গবেষণা না থাকতো। এ জন্য আমি গবেষণাকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেই। ’

সরকারের নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবো সেই ঘোষণা ২০০৮ দিয়েছিলাম। তারই ভিত্তিতে আমরা হাইটেক সিটি, হাইটেক পার্ক, তথ্য-প্রযুক্তি পার্ক আমরা প্রতিষ্ঠা করে যাচ্ছি। প্রযুক্তি শিক্ষার জন্য যা যা দরকার প্রতিটি জেলা-উপজেলায় আমরা করে যাচ্ছি। উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত কারিগরি শিক্ষাকে আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। প্রত্যেক উপজেলায় কারিগরি শিক্ষার ব্যবস্থা আমরা হাতে নিয়েছি’।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জিনোমিক গবেষণাগার প্রতিষ্ঠা করেছি। হাইড্রোজেন শক্তি গবেষণাগার, জাতীয় জিন ব্যাংক স্থাপনের কাজ অতি দ্রুতই সম্পন্ন হবে। মলিকুলার গবেষণাগার স্থাপন করার পদক্ষেপ নিয়েছি। লেদার টেকনোলজিটাকে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অ্যাপিলিয়েটেড করে দেই। যাতে লেদার টেকনোলজি ইনস্টিটিউট ভালো ভাবে চলে এবং আমাদের ছেলেমেয়েরা শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে’।

উচ্চ শিক্ষা, বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি শিক্ষার প্রসারে সরকারের উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী জানান, তার ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ২৩টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৫৪টি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কৃষি, ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিম্যাল সাইন্সেস, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, চিকিৎসা, ডিজিটাল, ইসলামি-আরবি, টেক্সটাইল, মেরিটাইম, এভিয়েশন ও এরোস্পেস, বেসরকারি ফ্যাশন ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়।

সর্বোচ্চ শ্রম ও দায়বদ্ধতা নিয়ে জাতীয় উন্নয়ন ও মানুষের কল্যাণে গবেষণা করার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দেশের মানুষের দেওয়া রাজস্ব থেকে আপনাদের ফেলোশিপ এবং গবেষণা অনুদান প্রদান করা হচ্ছে। আপনাদেরকেও যারা ফেলোশিপ পাচ্ছেন সর্বোচ্চ শ্রম ও দায়বদ্ধতা নিয়ে জাতীয় উন্নয়নে কাজ করতে হবে। কারণ আমরা চাই দক্ষ মানব শক্তি গড়ে তুলতে। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, প্রযুক্তির নতুন নতুন উদ্ভাবন তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে। ’

ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে চলতি বছরে ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’, ‘জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’ এবং বিজ্ঞানী ও গবেষকদের মধ্যে বিশেষ অনুদান প্রদান প্রাপ্ত গবেষকদের হাতে সম্মাননার চেক তুলে দেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান।