বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান বলেছেন,স্বেচ্ছাসেবক লীগ যে ভাবে এখন দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছে খুব অচিরেই এটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রধান সহযোগী সংগঠন হয়ে যাবে। দেশের সর্ব ক্ষেত্রে স্বেচ্ছাসেবক লীগ ব্যাপক ভূলিকা পালন করছে এবং আগামী দিনেও তারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করবে।
তিনি বলেন,স্বেচ্ছাসেবক লীগ করোনা কালে দেশের মানুষকে সহযোগিতা করেছে। সামনের দিনেও আপনারা শেখ হাসিনার পাশে থাকবেন। যে কোন অপশক্তিকে রুখে দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। বিএনপি জামাত যদি দেশের কোন ক্ষতি করতে চায় বা দেশের মানুষের কোন ক্ষতি করতে চায় তাহলে প্রয়োজনে মাঠে নেমে তাদের প্রতিহত করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করবেন।
শুক্রবার (২৫ মার্চ ) বিকেলে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ সংলগ্ন মাঠে বঙ্গবন্ধুর ১০২ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত টুঙ্গিপাড়াঃ ’হৃদয়ে পিতৃভূমি’ অনুষ্ঠানের আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধুর কথা স্বরণ করে তিনি বলেন,শেখ মুজিবের জন্ম হয়েছিলো বলে এ দেশে ভাষা আন্দোলন হয়েছে। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। যার ডাকে লক্ষ লক্ষ মানুষ ঝাপিয়ে পড়ে, ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতার লাল সূর্য। ঘাতকেরা বলেছিলো যে শেখ মুজিবকে হত্যা করেছি তার বিচার কখনো হবে না। যে জয় বাংলা কে নির্বাসনে পাঠিয়েছি বাংলাদেশে সেটি আর কখনো ফিরে আসবে না। কিন্তু আজ বাংলার মাটিতে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার হয়েছে। জয় বাংলা এখন প্রত্যেকটি ঘরে ঘরে উচ্চারিত হয়।তারা বাংলাদেশ থেকে স্বাধীনতার চেতনা মুছে ফেলতে পারিনি।
তিনি আরও বলেন,বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা আজ বাংলাদেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে গেছেন।বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন বাস্তবায়নে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন।দেশকে স্বল্প উন্নত দেশ থেকে উন্নত দেশে রুপান্তর করছেম। দেশে আজ শতভাগ বিদ্যুৎ। সব কিছু হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার জন্য। বঙ্গবন্ধু কন্যা যখন দেশে এসেছেন তিনি বলেছেন আমার জীবন যদি আমার পিতার মত চলে যায় তবুও আমি এ দেশের মানুষের জন্য কাজ করবো।
স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহের সভাপতিত্বে ও সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবুর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ-এর সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এমপি, বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও কলাম লেখক সুভাষ সিংহ রায়,গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান খান।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন,বঙ্গবন্ধু আল্লাহর এক ঐশিক দান,ছোট বেলা থেকে বঙ্গবন্ধুর আচরণ ছিলো অন্য রকম,তিনি ছোট বেলা থেকে উপকারী ছিলেন,হাজার বছরের সাধনার ফসল ছিলেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ থেকে ২টি আলাদা ভূখন্ড নিয়ে একটি দেশ গঠিত হয়।কিছুদিন যাওয়ার পর বঙ্গবন্ধু বুঝতে পারেন পাকিস্তানিরা আমাদের শোষন করছে।সারা বাংলাকে সর্ব দিক দিয়ে পিছিয়ে ফেলার চেষ্টা করছে।তখন থেকে তিনি আন্দোলন শুরু করেন। পাকিস্তানিরা বুঝতে পারে,বঙ্গবন্ধু তাদের জন্য বিপদ জনক।তাই তারা বঙ্গবন্ধুকে সরিয়ে দেওয়ার নানা চেষ্টা করে।কিন্তু তারা সফল হয়নি। তার ডাকে মানুষ ঝাপিয়ে পড়ে নিয়ে আসে স্বাধীনতার লাল সূর্য।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু তার জীবনের ৪৬৮২ দিন জেলে কাটিয়েছেন।তিনি তার জীবনের সব কিছু দেশের মানুষের জন্য বিলিয়ে দিয়েছেন। তিনি চেয়েছেন এ দেশের মানুষ দুমুঠো খেয়ে বেচে থাকুক। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি সেটি মেনে নিতে পারেনি। তারা ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু কে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়। তারা চেয়েছে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে দেশ থেকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মুছে ফেলতে। দেশকে পুনরায় পাকিস্তান আদলে গড়তে।কিন্তু তারা সফল হয়নি। আজ দেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান এমপি বলেন, বঙ্গবন্ধু এমন একজন মানুষ যার কথা দিনের পর দিন মাসের পর মাস বললেও শেষ হবে না।তিনি জন্মেছিলেন বলে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি,একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি,বাংলায় কথা বলতে পারছি। বঙ্গবন্ধু ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক। তিনি জানতেন তিনি গ্রেফতার হবেন,তাও তিনি দেশের কথা দেশের মানুষের কথা ভেবে এত ত্যাগ করেছেন।তার একটি ১৮ মিনিটের ভাষনে সারা দেশের মানুষ ঝাপিয়ে পড়ে। যার ফলস্বরূপ আজকের স্বাধীন বাংলাদেশ। তার স্বপ্ন ছিলো ক্ষুধা দারিদ্র্য মুক্ত একটি সোনার বাংলাদেশ। সে স্বপ্ন বাস্তবায়নে কাজ করছেন তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন,বাংলাদেশ আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি ম আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুল আলীম বেপারী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোবাশ্বের চৌধুরী, খায়রুল হাসান জুয়েল, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মনোয়ারুল ইসলাম বিপুল,প্রশিক্ষণ ও কর্মশালা সম্পাদক জাহিদ সুমনসহ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণসহ গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, শরিয়তপুর, রাজবাড়ী, খুলনা জেলা, খুলনা মহানগর, বাগেরহাট, মাগুরা, নড়াইল ও পিরোজপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা।
বঙ্গবন্ধুর ১০২ তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়াঃ ’হৃদয়ে পিতৃভূমি’ প্রতিপাদ্যে আয়োজিত কর্মসূচির মধ্যে ছিলো, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান , জয় বাংলা ক্যাম্পেইন,শিশু কিশোরদের মাঝে শিক্ষা উপকরন বিতরন ও আশ্রায় প্রকল্পের পরিবারের মাঝে খাদ্য বিতরণ ও বস্ত্র বিতরন কর্মসূচি।