দেশের জনগণের অবস্থা করুণ ও মর্মান্তিক। নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আলোর গতিতে দৌড়াচ্ছে। রপ্তানিকারক দেশ গম রপ্তানি বন্ধ করেছে। চালের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি এবং সয়াবিন তেল উধাও হয়ে যাওয়ার পর কয়েক দিনের মধ্যে আটা ক্রয় করা অসম্ভব হবে সাধারণ মানুষের জন্য বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী ।
সোমবার (১৬ মে) দুপুরে নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে খাদ্যপণ্যের দামের উর্ধ্বমুখী গতি থামছেই না। খাদ্যপণ্য নিয়ে সব ধরনের গভীর সংকটে বাংলাদেশ। উজানের পানি এবং বাঁধ ভেঙে বাংলাদেশের এক বিস্তৃত অঞ্চলের ধান তলিয়ে গেছে। কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। সারা জাতি আকুল উৎকন্ঠায় দিনাতিপাত করছে। বাংলাদেশ দ্রুতগতিতে দেউলিয়াত্বের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। শ্রীলঙ্কার চেয়ে বাংলাদেশের অবস্থা আরও সংকটাপন্ন। ’
তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমের কন্ঠরোধ করে ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্র কায়েম এবং অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে অনির্বাচিত নিশিরাতের সরকার। ডিফেমেশন ল’, অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট, কনটেম্পট অব কোর্ট, আইসিটি অ্যাক্ট, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট, গণমাধ্যমকর্মী আইন, ডেটা প্রটেকশন অ্যাক্ট এবং ওটিটি আইনসহ অনেকগুলো নিবর্তনমূলক কালাকানুন করে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা গোরস্থানে কবরের মধ্যে শায়িত করা হয়েছে। সাংবাদিকদের হাত-পা বেঁধে দিয়ে অবরুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করা হয়েছে। ’
বিএনপির ওই নেতা বলেন,‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার অন্যতম অপরিহার্য পূর্বশর্ত হচ্ছে স্বাধীন গণমাধ্যম এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা। দেশের বিচার ব্যবস্থা এখন একচক্ষু হরিণের মতো। আর সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর মাফিয়া আগ্রাসন চলছে। ’
আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে নীলনকশা হিসেবে নতুন নতুন কালাকানুন তৈরিতে ব্যস্ত দাবির করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, টুইটার, ইউটিউব ও অন্য মাধ্যমের নিয়ন্ত্রণের জন্য নতুন আইন প্রণয়ন করছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ডিজিটাল মাধ্যম ও ওভার দ্য টপ (ওটিটি) মাধ্যমের জন্য নতুন একটি প্রবিধান বা নীতিমালা তৈরি করছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। ২০১৮ সালেও জাতীয় নির্বাচনের মাত্র তিন মাস আগে তড়িঘড়ি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাস করা হয়। এবারও আরেকটি নতুন কালাকানুন তৈরির যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা হবে আরও ভয়ঙ্কর। ’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, সহ-প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন প্রমুখ।