যে কোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে হবে: আওয়ামী লীগ

বর্তমান বৈশ্বিক সংকটের প্রভাব এবং নির্বাচনকে সামনে রেখে যে কোনো ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় দলের কর্মীদের সতর্ক ও প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা।

সোমবার (৮ আগস্ট) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সহধর্মিনী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ উপ-কমিটি আয়োজিত আলোচনা সভা ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে ফলমূল, শাকসবজি ও মাস কলাইয়ের বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগ নেতারা এ কথা বলেন।

বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

সভায় নেতারা বঙ্গমাতা যে ত্যাগ স্বীকার করে বঙ্গবন্ধুকে সাহস ও প্রেরণা দিয়েছেন সবাইকে তাঁর থেকে শিক্ষা নেওয়ার আহ্বান জানান।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বলেন, বঙ্গমাতা শুধু বঙ্গবন্ধুর স্ত্রীই ছিলেন না, তিনি বঙ্গবন্ধুকে রাজনীতি করতে সহযোগিতা করেছেন। কঠিন দৃঢ়তা ও সাহস নিয়ে তিনি বঙ্গবন্ধুর পাশে সব সময় থেকেছেন, অনুপ্রেরণা যুগিয়েছেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে মুক্তি নিতে পরিবারকে রাজি করানোর জন্য দলের অনেক নেতা সেদিন চাপ প্রয়োগও করেছিলেন। কিন্তু বঙ্গমাতা দৃঢ়তার সঙ্গে তা প্রত্যাখান করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, আমি একা বিধবা হবো না যে ৩৫ জন বন্দী আছেন তাদের স্ত্রীরাও বিধবা হবেন। বঙ্গমাতা কোনো বিশ্ববিদ্যায়ে লেখাপড়া করেননি। কিন্তু তার মধ্যে এই রাজনৈতিক সচেতনতা, দৃঢ়তা এটা তিনি জীবনের পাঠশালা থেকে শিক্ষা নিয়েছিলেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিশেষজ্ঞরা হুঁশিয়ার করেছেন বর্তমান বৈশ্বির সংকটের কারণে পৃথিবীতে যে কোনো সময় খাদ্য সংকট, দুভিক্ষ দেখা দিতে পারে। এ ধরনের সংকটের সুযোগ নিয়ে নানা রকম ষড়যন্ত্র হয়। সক ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে আগামীতে কোনো অঘটন না ঘটে তার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।

তিনি বঙ্গমাতার স্মৃতিচারণ করে বলেন, এতো দেশ প্রেম, সাহস ও ধৈর্য তাঁর যার প্রমাণ আমরা তাঁর বিভিন্ন কর্মের মধ্য দিয়ে পাই। স্বামীর (বঙ্গবন্ধুর) সঙ্গে সঙ্গে তিনি নিজেই সাহস, দেশ প্রেম ধারন করেছেন।

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, তারা জানে শেখ হাসিনাকে যদি হত্যা করা যায়। সারা জীবনের জন্য তারা ক্ষমতায় থাকতে পারবে। তাই আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে স্মরণ করে বলেন, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুকে প্যারোলে মুক্তির জন্য দলের নেতারা পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু বঙ্গমাতা বাধা দিয়ে বলেছিলেন প্যারোলে মুক্তি তিনি নেবেন। তাকে মুক্তি দিতে হলে সব আসামীকে নিয়ে সম্মানের সঙ্গে মুক্তি দিতে হবে, সরকার সেটাই করবে। পরে সেটাই হয়েছিল। আর ৭ মার্চের ভাষণের আগে বঙ্গবন্ধুকে অনেক নেতা অনেক পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু বঙ্গমাতা বলেছিলেন, তুমি কারো কথা শুনবে না, তোমার মনে যেটা আসে তুমি সেটাই বলবে। বঙ্গবন্ধু তাই করেছিলেন।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন নির্বাচন এলে ষড়যন্ত্র হয়। সরকার উৎখাতের, তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আমাদের এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে। বড় অঘটন যাতে ঘটতে না পারে তার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। বঙ্গমাতা একজন সফর স্ত্রী হিসেবে বঙ্গবন্ধুকে সহযোগিতা করেছেন, সাহস যুগিয়েছেন। আবার একজন সফল মা হিসেবে তার সন্তানদেরকে যোগ্য করে গড়ে তুলেছেন।

আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ উপ-কমিটির সদস্য সচিব সুজিত রায় নন্দীর পরিচালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন ও কার্যনির্বাহী সদস্য আব্দুল আউয়াল শামীম।